বিএনপির পক্ষ থেকে বার বার অস্বীকার করা হলেও এবার খোদ ব্রিটেনেই তারেক রহমান তার ব্রিটিশ পাসপোর্ট দিয়ে ব্যবসা খুলেছেন। এই সংক্রান্ত সংবাদ প্রমাণসহ আমাদের কাছে এসেছে।
অনুসন্ধ্যানে জানা যায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বর্তমানে ব্রিটিশ নাগরিক হিসাবেই বসবাস করছেন ব্রিটেনে। ব্রিটেনের কোম্পানী হাউজে তারেক রহমানের দেয়া ব্যক্তিগত তথ্য বিবরণী অনুযায়ী তিনি ব্রিটিশ নাগরিক।
কোম্পানী হাউজের ওয়েবসাইটে হোয়াইট অ্যান্ড ব্লু কনসালটেন্ট লিমিটেড (ব্রিটিশ কোম্পানী রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার– ০৯৬৬৫৭৫০) নামের একটি নতুন চালু হওয়া কোম্পানীর ডিরেক্টর হিসেবে তারেক রহমান নিযুক্ত হোন ২০১৫ সালের জুলাই মাসে।
তখন কোম্পানী হাউজের তথ্য অনুযায়ী তারেক রহমানের নাগরিকত্ব বলা হয়েছে বাংলাদেশী। তবে কোম্পানী হাউজের শেয়ার অন্যান্য তথ্যের একটি জায়গায় বলা হয়েছে তিনি ব্রিটিশ নাগরিক।
কোম্পানীটি চ্যারিটি ইন করপোরেট হিসাবে ছোট ব্যাবসা হিসাবে নিবন্ধিত। কোম্পানীর শেয়ারের বিষয়ে বলা হয়েছে, ১০০ শেয়ারের ৫০ শতাংশ হচ্ছে তারেক রহমানের এবং বাকি ৫০ শতাংশ হচ্ছে তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমানের।
২০১৮ সালের ২১ এপ্রিলের তথ্য অনুযায়ী কোম্পানীটি মাইক্রো কোম্পানী হিসাবে ১লা আগষ্ট ২০১৬ থেকে ৩১ জুলাই ২০১৭ সালের ব্যবসা সংক্রান্ত প্রথম রিটার্ন জমা দেয়।
সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বাংলাদেশী নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্ক চলছে। তারেক রহমান তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট জমা দিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন, এমন তথ্যের সূত্র ধরেই এ বিতর্কের শুরু।
গত ২১ এপ্রিল লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘তারেক রহমান বাংলাদেশের সবুজ পাসপোর্ট হাইকমিশনে জমা দিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর এ বক্তব্যকে বিএনপির পক্ষ থেকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়। তার বক্তব্যের পক্ষে বিএনপি প্রমাণ দাবি করলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন করে তারেক রহমানের পাসপোর্ট ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তরে জমা দেয়ার নথি দেখালে বিএনপির পক্ষ থেকে জাননো হয় তিনি ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সেসময় যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের মাধ্যমে তারেক রহমানের পাসপোর্ট লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে জমা দেওয়ার একটি নথি দেখিয়ে প্রতিমন্ত্রী দাবি করেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এখন আর বাংলাদেশের নাগরিক নন। এর মধ্যেই ব্রিটেনের কোম্পানি হাউজের নথিতে এই তথ্য আসলো।
এতিমদের জন্য পাঠানো ২ কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শুরুতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। তারেক রহমানসহ অন্য পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। এই রায়ের পর লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়।
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতির একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান তিনি। দীর্ঘদিন কারাগারে আটক থাকার পর ২০০৮ সালে জামিন পেয়ে তিনি চিকিৎসার জন্য ওই দেশে যান। এরপর থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন।