বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। আর এই সময়ে বিএনপিতে সবচে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হয়ে উঠেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মূলত তারেকের আর্শিবাদেই তিনি বিএনপির দলীয় ক্ষমতাকেন্দ্রের শীর্ষে চলে আসেন। তার পীড়াপিড়িতেই তারেক রহমানকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন ঘোষণা করা হয়।
লন্ডন তারেকের অনুগ্রহ পাওয়ার ফলে রিজভী বর্তমানে দলের মহাসচিব থেকে শুরু করে স্থায়ী কমিটির সিনিয়র নেতাদেরকেও নির্দেশ দিচ্ছেন। তার স্বেচ্ছাচারিতা একপ্রকার অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। কিন্তু বেগম জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগেই একাধিকবার দলের সিনিয়র নেতাদের সাথে বৈঠক করে দলের কর্মপন্থা ঠিক করে গেছেন, যেখানে তারেকের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন হওয়ার কথা ছিল না।
রায়ের আগে জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক ছাড়াও দুইবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক ছাড়াও জেলে যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে তিনি সিনিয়র নেতাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দিয়ে গেছেন বেগম জিয়া। তখনও তিনি তারেক রহমানকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন করে যাননি বা এমন কোন নির্দেশনা দিয়ে যাননি। সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে তারেকের পরামর্শ অনুযায়ী দল চালানোর কথাই তিনি বলে গেছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই দৃশ্যপট পাল্টে যেতে থাকে। দলে তারেক পন্থীরা নিজেদের আসন পাকাপোক্ত করতে ব্যস্ত হয়ে যায়।
অস্থায়ী আদালতে রায় শুনতে গিয়েছিলেন দলের মহাসচিবসহ সিনিয়র কয়েকজন নেতা। রায় ঘোষণার পর দলের কার্যালয়ে আসার আগেই তারা দেখেন বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ফেলেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসিচব রুহুল কবির রিজভী। মূলত তখন থেকেই বিএনপি তিন ভাগে ভাগ হয়ে যায়। বাইরে যতই তারা বলুক না কেন দলের কোন অন্ত:কোন্দল নেই কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। বিএনপি এখন মূলত তিনভাগে বিভক্ত। একভাগের নেতৃত্বে রয়েছেন তারেকপন্থীরা। এই দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন রুহুল কবির রিজভী।
এই দলে মূলত অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতারা রয়েছেন। যারা বিশ্বাস করেন দলের এই অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য তারেকের নেতৃত্বে আন্দোলনই একমাত্র পথ। আর একদল মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে রয়েছেন। তারা খালেদাপন্থী হিসেবে পরিচিত।
এর বাইরে দলের একটি উদারপন্থী গ্রুপ রয়েছে যারা বিশ্বাস করে যে, তারেকের নেতৃত্বে বিএনপির ক্ষতি ছাড়া লাভ নেই। তারা সংস্কারপন্থী হিসেবেও পরিচিত। এই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক সেনা প্রধান মাহবুবুর রহমান, মেজর হাফিজ উদ্দিন এবং অন্যরা।