বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় সামনে রেখে গত ১ সপ্তাহে দলটির বেশ কিছু নেতা গা ঢাকা দিয়েছেন। তাদের আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। সম্পূর্ণ নেতাকর্মীশূন্য হয়ে পড়েছে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়।
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার রায় সামনে রেখে নেতাদের ‘গ্রেপ্তার’ হওয়া ও ‘অসুস্থতা’ নিয়ে পারস্পারিক সন্দেহ-অবিশ্বাস ভর করেছে বিএনপিতে। আন্দোলনে অংশ নেয়ার ‘ঝুকি’ থেকে গা বাঁচাতেই কোনো কোনো নেতা এ পথ ধরেছেন বলে অনেকটা প্রকাশ্যেই আলোচনা হচ্ছে। এছাড়া, পরিস্থিতির সুযোগ কাজে লাগিয়ে দলের অভ্যন্তরে নেতৃত্বের লড়াইয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার অভিযোগও রয়েছে কতিপয় নেতা বিরুদ্ধে।
বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মীর বিশ্বাস, আন্দোলন থেকে বিরত থাকতে এবং নিজের গা বাঁচাতে দলটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা কতিপয় নেতা স্বেচ্ছায় পুলিশের হাতে ধরা দিয়েছেন। আরো কয়েকজন ধরা দেয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। যে কোনো সময় তারা ধরা দিয়ে কারাগারে গিয়ে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত কবেন; যাতে আন্দোলন ব্যর্থ কিংবা সফল যা ই হোক তাদের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তা ও আত্মগোপনে থাকার অভিযোগ না আসে হাইকমান্ড থেকে। কর্মীরা মনে করেন ৮ ফেব্রুয়ারির আগে আরো অন্তত একজন হাই প্রোফাইল নেতাসহ এই গোত্রের অন্তত ডজনখানেক নেতাকে দেখা যেতে পারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে।
নয়াপল্টন অফিসে ঘুরে দেখা যায়, অফিসের ভেতরে ৩ জন পিয়ন আর ৪ জন অফিস কর্মচারী ছাড়া আর কেউ নেই। খালেদা জিয়ার মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণের আগে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীর পদচারণায় মুখরিত থাকত বিএনপির এই কেন্দ্রীয় কার্যালয়। কিন্তু গতকাল রবিবার ছিল ভিন্ন চিত্র। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম ছাড়া রিজভীর পাশে আর কাউকেই দেখা যায়নি। গত মঙ্গলবারের পর বেশ কয়েক দিন নয়াপল্টন থেকে বের হননি রিজভী। ক্ষোভ প্রকাশ করে রিজভীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম বলেন, সেইভ জোন পলিটিক্স বিএনপিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। দলের মহাসচিব বড় বড় কথা বলেন অথচ তিনিই নিয়মিত পার্টি অফিসে আসেন না। আরো কিছু শীর্ষ নেতা তো দল ভাঙ্গতে উঠে পড়ে লেগেছে। একদিন বিএনপি ভেঙ্গে দু টুকরা হলেও অবাক হবেন না বলে মন্তব্য করেন এই নেতা।