৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজা হয়ে যদি বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে যেতে হয়, তখন কার নেতৃত্বে চলবে দল— সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে। তবে আপাতত বিএনপির স্থায়ী কমিটি এক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে কোন কারনে দলের চেয়ারপারসনের জেল হলে দ্বায়িত্ব তারেকের হাতে দেবে না তারা। সেক্ষেত্রে একটা বিকল্প নেতৃত্ব বাছাই করার কথাও ভাবছে দলটির একাধীক নেতারা।
২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানই ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু তিনিও দুর্নীতির এক মামলায় সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তার দেশে ফেরার সম্ভাবনাও নেই। সে ক্ষেত্রে এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দলের কোন এক শীর্ষ নেতাকে দলের দ্বায়িত্বে আনতে চায় দলটির একাধিক নেতারা। দরকার হলে নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে দলের নেতাকে।
সূত্রমতে, খালেদা জেলে গেলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কী করণীয় তা নিয়ে গতকাল রাতে দলের স্থায়ী কমিটির সঙ্গে দীর্ঘ সময় বৈঠক করেছেন বেগম জিয়া। এদিকে লন্ডন সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে লন্ডন থেকেই দলের দিকনির্দেশনা দেবেন তারেক রহমান। সেভাবে প্রস্তুতিও নিচ্ছেন খালেদাপুত্র। এ নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়ে গেছেন দলের শীর্ষ নেতারা। তাই ২৭ জানুয়ারী রাতের স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষেই দলের বেশ কিছু শীর্ষ নেতা রাতভর বৈঠক করে একটা সিদ্ধান্তে আসতে পেরেছেন। দলের এক স্থায়ী কমিটির সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন- দলের চেয়ারপারসনের জেল হলে দ্বায়িত্ব তারেকের হাতে দেবে না তারা, সেক্ষেত্রে নেতা হবেন দলেরই কোন এক শীর্ষ নেতা। ভিতরে ভিতরে অনেক সিনিয়র নেতার এ মনোভাব থাকলেও প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে নারাজ। বিএনপির আর এক সিনিয়র নেতা জানান, খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিএনপিতে ভাঙন ধরাতে দলের মধ্যে একটি বিশেষ মহল কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে ২০০৯ সালের সংশোধিত গঠনতন্ত্রের ৭-এর ‘ঘ’ ধারা সামনে আনা হতে পারে। ওই ধারায় কোনো দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তির বিএনপির কোনো পর্যায়ের কমিটির সদস্যপদ বা সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হওয়ার কথা আছে। গঠনতন্ত্রের এ ধারা মানলে তারেক জিয়াকেও দলের পদ থেকে অব্যহতি নিতে হবে।
