দেশজুড়ে মহাসমারোহে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মদিন পালন করেছে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া গুলশান কার্যালয়ে ২০ নভেম্বর প্রথম প্রহরে ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে ৫৩ পাউন্ডের ঢাউস সাইজের ৭টি কেক কেটে উৎসবের উদ্বোধন করেন।
তারেক রহমানের জন্মদিন পালনের নামে দেশজুড়ে ব্যাপক চাঁদাবজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঝিমিয়ে পড়া বিএনপিকে চাঙ্গা করতে দেশজুড়ে তারেক রহমানের জন্মদিন পালনের নির্দেশ দেন স্বয়ং চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।
কিন্তু বেপড়োয়া চাঁদাবাজিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বিভিন্ন জায়গার ব্যবসায়ীরা। দেশের সর্ববৃহৎ পাইকাড়ি মার্কেট চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ। এখানে প্রতিদিন কয়েক হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি করে থাকেন ব্যবসায়ীরা। এখান থেকেই মূলত ব্যবসায়ীরা সারাদেশে পণ্য সরবরাহ করেন।
খাতুনগঞ্জের প্রতিষ্ঠিত এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন এই প্রতিবেদকের কাছে। তবে শর্তজুড়ে দেন নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশ করা যাবে না। গত ১৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদৎ হোসেনের এক অনুসারী তাকে ফোন করে বলেন, ২০ তারিখে ভাইয়ার জন্মদিন। বোঝেনই তো অনেক খরচ। তাই শাহাদৎ ভাই আপনাকে স্মরণ করেছেন।’
কোন ভাইয়া জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত কণ্ঠে বলেন দেশে থাকেন না, নাকি বিদেশে থাকেন? দেশে ভাইয়া কয়টা? তারেক রহমানের জন্মদিন। আপনাকে যা বলা হয়েছে তা করবেন। বেশি কথা বলবেন না। এমন হুমকি দিয়ে সেই নেতা ফোন রেখে দেন।
কত টাকা দিতে হয়েছে এবং কেন তিনি টাকা দিলেন জানতে চাইলে উত্তরে সেই ব্যবসায়ী বলেন, ভাই আমরা সাধারণ ব্যবসায়ী মানুষ। ব্যবসা করে খাই। কি দরকার ঝামেলা করার। তার পর নির্বাচনের আগে আগে এমন হুমকি ধামকি দিলে ভয় তো পাবোই। চেয়েছিল ৫০ লাখ টাকা। দেন দরবার করে ১৫ টাকাতে রাজি করিয়েছি। এছাড়া কোন উপায় ছিল না। তিনি জানান, তারা জানা মতে খাতুনগঞ্জের ১৫-২০ জন ব্যবসায়ী ডা. শাহাদৎকে টাকা দিয়েছেন।
এমন ঘটনা ঘটেছে ঢাকাতেও। এক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জুয়েলারি ব্যবসায়ীকে বিএনপির কেন্দ্রীয় খুব প্রভাবশালী এক নেতা ফোন করে বলেন, ইন্ডিয়াতে তো অনেক সম্পদ গড়েছেন। এবার আমাদের দিকেও একটু চোখ দেন। তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে তার কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা আদায় করেন বলে তিনি জানান। সামনে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তার কোন ক্ষতি হবে না বলে আশ^াসও দেন ওই নেতা।
রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটেও এমন চাঁদাবাজি চলেছে বলে সত্যতা পাওয়া গেছে। বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপি নেতারা তাদেরকে হুমকি দিয়েছেন এই বলে যে, আর মাত্র ১ বছর। নির্বাচনের পরেই বিএনপি ক্ষমতায় আসছে। এখন তাদের কথা না শুনলে সামনের দিনে বিপদ হবে।