তারেকের বদনাম ঘোচাতে মিলিয়ন ডলার ফান্ড, কূটনৈতিক দৌড়ঝাপ

0
0
বিএনপির দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা ও দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদে মদদ দেয়া এবং তার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে জঙ্গিবাদের উত্থানের বিষয়টি বহু পুরনো। তারেক রহমানের বিষয়ে বিভিন্ন দেশের মনোভাব তাই বেশ নেতিবাচক। বিশেষ করে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব তারেক সম্পর্কে একেবারেই নেতিবাচক। এবার বিএনপির বিশেষ একটি কূটনৈতিক টিম তারেক রহমানের অতীত বদনাম ঘোচাতে মিলিয়ন ডলারের ফান্ড নিয়ে মাঠে নেমেছে।
এই কাজে ব্যয় করা হবে ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ২৫ মিলিয়ন ডলারের ফান্ডের যোগান দিয়েছে জামায়াত ইসলামী আর বাকি ৫ মিলিয়ন ডলারের যোগান এসেছে পাকিস্তানী গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এর কাছ থেকে।তবে এখনো পর্যন্ত ক্ষমতাধর দুটি রাষ্ট্রের মনোভাবের কোন পরিবর্তন করাতে পারেনি তারা।
সাড়া জাগানো ওয়েব সাইট উইকিলিকসের ফাঁস করা নথি থেকে জানা যায় তারেক রহমানকে ‌‌সন্ত্রাসী মনোভাবাপন্ন এবং দুর্নীতিগ্রস্ত’ উল্লেখ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত প্রেট্রিসিয়া এ বিউটিনেস ওয়াশিংটনে গোপন তারবার্তা পাঠিয়েছিল। সেই তারবার্তাতেই তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেক করেছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে তারেক রহমানকে কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেয়া উচিত হবে না।
ঠিক এই কারণেই বিগত সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে বিদেশে চিকিৎসা করাতে যাওয়ার জন্য তারেক রহমানের প্রথম পছন্দ ছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা না পেয়ে তাকে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে যেতে হয়। বিভিন্ন কূটনৈতিক সুত্রে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের তারেক রহমান সম্পর্কে ওই মনোভাবের এখনো কোন পরিবর্তন হয়নি।
তারেক রহমান সর্ম্পকে নিকট প্রতিবেশেী ভারতের মনোভাব আরো বেশি নেতিবাচক। দিল্লীর সাউথ ব্লকের নীতি নির্ধারকরা তারেক রহমানকে তাদের দেশের মোস্ট ওয়ানটেড সন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহিম বা বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা পরেশ বড়ুয়ার চেয়েও বেশি ক্ষতিকর মনে করে।
তারেক রহমানকে ভারতীয় স্বার্থের জন্য হুমকি মনে করার বহু কারণ থাকলেও অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন বাংলাদেশে বিএনপির রাজনীতির শেষ ডেকে এনেছেন তারেক রহামান নিজেই। কারণ ২০০৪ সালের ১০ এপ্রিল চট্টগ্রামে ১০ অস্ত্র আটক হলে বিএনপির ভবিষ্যৎ মেপে ফেলে ভারত। ভারতের কংগ্রেস ও বিজেপি উভয় দলই মনে করে তারেক রহমান ভারতীয় স্বার্থের জন্য শুধু ক্ষতিকরই না রীতিমত হুমকি। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে  দিল্লী কখনোই তারেক রহমানকে মেনে নিবে না বলে মনে করেন ভারতীয় অনেক সিনিয়র সাংবাদিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক।
এর আগে বেগম খালেদা জিয়া বিরোধী দলীয় নেত্রী থাকার সময়ে ভারত সফরে গেলে তাকে উষ্ণ সংবর্ধনা দিলেও ভারত তারেক রহমান সম্পর্কে বেগম জিয়ার কাছে জানতে চায়। তখন বেগম জিয়া ভারতীয় নীতি নির্ধারকদের জানিয়েছিলেন যে, তারেক রহমান রাজনীতিতে আর আসবেন না। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। কাগজে কলমে তারকে রহমান বিএনপির দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা হলেও বাস্তবতায় তিনিই দলের প্রধান নেতা। সময়ের সাথে সাথে তারেক রহমান দলে নিজের অবস্থান আগের চেয়ে আরো বেশি সংহত করেছেন। বিএনপিতে তারেক রহমানের উত্থানে চিন্তিত দিল্লী।
বিএনপি মনে করে আগামীতে ক্ষমতায় যেতে হলে ভারতীয় মনোভাবের পরিবর্তন জরুরী। তাই তারা দিল্লীর মান ভাঙ্গাতে বহু চেষ্টা তদবির করছে। বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ২০১৩ সাল থেকেই দিল্লীতে বলতে গেলে স্থায়ী আবাস গড়েছে দিল্লীর মনোভাব তারেকের পক্ষে আনার জন্য। মাঝে ২০১৪ এর ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পরে এই মান ভাঙ্গানোর কাজ থেকে দূরে থাকলেও সামনের বছরের নির্বাচন উপলক্ষে সেই গোষ্ঠীর দৌড়ঝাপ আবারো বেড়েছে। তবে এখন পর্যন্ত দিল্লী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে তারেক রহমান যতদিন থাকবে বিএনপিতে ততদিন পর্যন্ত দিল্লী বিএনপি সম্পর্কে তাদের পূর্বের কোন মনোভাবেরই পরিবর্তন করবে না।

comments

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here