মেকআপ বক্স নিয়ে খালেদা জিয়ার হুলুস্থুল কাণ্ড!

0
218
২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর মাস। বেগম খলেদা জিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক যাচ্ছেন। ভিভিআইপি থেকে বেগম জিয়ার ব্যাগপত্র তোলা হচ্ছে। প্রত্যেক ব্যাগে এসএসএফের সিকিউরিটি ট্যাগ লাগানো। প্লেনে উঠানোর আগে সবগুলো ব্যাগের নিরাপত্তা তল্লাশি চালালেন একজন তরুণ মেজর। এসএসএফের এই অফিসার লক্ষ্য করলেন একটি দামী ছোট ব্যাগের কোন সিকিউরিটি ট্যাগ নেই। তিনি সেটি সরিয়ে দিলেন। ব্যাগটা পড়ে থাকলো এয়ারপোর্টে। মেজর একটি নোট লিখে এয়ারপোর্ট সিকিউরিটিকে ব্যাগটি দিলেন। এমিরেটসের প্লেন চলে গেল।
 
বিপত্তি ঘটলো নিউইয়র্কে গিয়ে। পরদিন সকালেই বেগম জিয়ার সঙ্গে ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ। প্রধানমন্ত্রীর মেকআপ পারসন মাথায় হাত দিলেন। বেগম জিয়ার সব কিছু এসেছে, আসেনি শুধু মেকআপ বক্স। হুলস্থূল পড়ে গেল। ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে গেলেন না প্রধানমন্ত্রী। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রিয়াজ রহমান কোনমতে সামলালেন। প্রধানমন্ত্রীর সচিব, মুখ্য সচিব অনুসন্ধান শুরু করলেন। মেকআপ বক্স গেল কোথায়? ঢাকা আর নিউইয়র্কের সময়ের পার্থক্য ১২ ঘন্টা। দুইদিন লেগে গেল কী হয়েছে জানতে। এই দুইদিন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে যেন শোকের মাতম চলছে। এই দুই দিনে তিনটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক বাতিল হয়ে গেল। বিকেলে বিএনপির মার্কিন প্রবাসীদের সাথে বৈঠকও পিছিয়ে দেয়া হলো। পত্রিকায় খবর এলো, বেগম জিয়া অসুস্থতার জন্য বৈঠকে অনুপস্থিত। ঢাকা থেকে ঐ মেকআপ বক্স আনতে আরো দুইদিন সময় লাগবে। অথচ প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে ভাষণ দেবেন পরদিন। মেকআপ এক্সপার্টকে নিয়ে বেরুলেন খোদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোর্শেদ খান। লিস্ট ধরে ধরে দামী দামী সব ব্র্যান্ডের দোকান থেকে মেকআপ কেনা হলো। একটা করে জিনিস কেনা হচ্ছে আর বেচারা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখটা লাল উঠছে। বিকেল পর্যন্ত চললো কেনাকাটা। পরে মোর্শেদ খান তার একান্ত সচিবকে বললেন,ঢাকা থেকে টাকা পাঠাও। একান্ত সচিব অবাক হলেন। মন্ত্রী জানালেন, ৬২ হাজার ডলার খরচ হয়েছে মেকআপের জিনিসপত্র কিনতেই।
 
যাইহোক শেষ পর্যন্ত, বেগম জিয়া মেকআপ করলেন। সন্ধ্যায় ঝলমলে প্রধানমন্ত্রী বেরুলেন বিএনপির স্থগিত হওয়া বৈঠকে যোগ দিতে। বৈঠকে যেতে যেতেই তার সচিবকে বললেন, কে এইটা করেছে, তাকে এখুনি চাকুরিচ্যুত করতে। ঢাকায় বার্তা গেল। এসএসএফের প্রধান এক ঘন্টার মধ্যে মেজরকে এসএসএফ থেকে প্রত্যাহার করলেন। সেনা প্রধানকে জানানো হলো অবিলম্বে তাকে বরখাস্ত করতে হবে। সেনা প্রধান মঈন ইউ আহমেদ তদন্ত কমিটি করলেন। বিপত্তি ঘটলো এখানেই। তদন্ত কমিটি তদন্তে দেখলো মেজরের কোন দোষ নেই।
 
বেগম জিয়া নিউইয়র্ক থেকে দেশে ফিরে এলেন। সব কিছু ঠিকই চলতো হয়তো। কিন্তু মেকআপ করতে বসলেই, তার মেকআপ বক্স হারানোর কথা মনে হয়। তিনি ক্ষেপে উঠেন। সচিবকে বলেন, কি ব্যবস্থা নেয়া হলো?
 
সচিব ফোন করেন সেনা প্রধানকে। সেনা প্রধান বলেন দেখছি। একদিন সত্যিই ক্ষেপে গেলেন প্রধানমন্ত্রী। ডেকে পাঠালেন সেনা প্রধানকে। সেনাপ্রধান বুদ্ধিমান। তিনি তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে গেলেন। বেগম জিয়া ক্রুদ্ধ হয়ে বললেন, এসব রিপোর্ট বুঝি না। আমি শাস্তি চাই। সেনাপ্রধান পরদিন, ঐ কর্মকর্তাকে দ্রুত বিদেশী মিশনে পাঠানোর উদ্যোগ নিলেন। বেগম জিয়াকে জানানো হলো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
 
সূত্রঃ বাংলা ইনসাইডার

comments

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here