গত বছর অমর একুশে ফেব্রুয়ারিতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে গেলে সেখানে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। দলীয় চেয়ারপারসনের উপস্থিতিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা জুতা পায়ে শহীদ মিনারের মূল বেদীতে উঠে ফুল ও সেলফি তুলে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন।
এবার জুতা পায়ে না উঠলেও মূল বেদীর যে স্থানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় ঠিক সেখানে উঠে শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া।
তাদের বাধা দিয়ে থামাতে পারেননি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্বরত রোভার স্কাউটসের সদস্যরা। এক রকম ধাক্কাধাক্কি করেই খালেদা জিয়া উঠে যান শহীদ মিনারের মূল বেদিতে । আর তখনি বাঁধে বিপত্তি । দলীয় নেতা-কর্মীরা সবাই মিলে শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পনের জন্য যাওয়ার সময় একাধিক গ্রুপের নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রথমে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এক সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতেই এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের পুস্পস্তবক ভেঙ্গে ফেলে। পরে উত্তেজিত নেতা-কর্মীদের মধ্যে মারামারি শুরু হয়।
১০-১৫ মিনিট মারামারি চলার পর তাদের থামানো চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকরা। সেখান থেকে জোর করে তাদের নামিয়ে দেওয়ার পর নিচে নেমে তারা আবারও মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
বিএনপির এক স্থায়ী কমিটির নেতা এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, দলীয় প্রোটোকল ভেঙে পড়েছে বিএনপির । কেউ আর আগের মতো কাউকে মানছে না । আর এই কারণে প্রতিবাোই শহীদ মিনারে অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম হচ্ছে।
লালবাগ থানা বিএনপির এক নেতা বাংলাদেশ টাইমসকে জানান, ‘কার আগে কে ফুল দিবে তা নিয়ে হুড়োহুড়ির পর মারামারিতে জড়িয়ে পড়েছিল তারা’।
প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতেই এই হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তিনি নেতা কর্মীদের থামতে বললেও তারা এই হাতাহাতি বন্ধ করেনি । পরে তিনি ফুল দিয়ে দক্ষিণ দিকের পথ দিয়ে বের হয়ে যান।
আরেক বিশ্বস্ত সুত্রের বরাত দিয়ে আমরা জানতে পারি, শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাওয়া নিয়ে খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার মাঝে নাকি এক বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়েছে। তারেক নাকি মোটেও রাজি ছিলেন না বিএনপির শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাওয়ার বিষয়টা নিয়ে।
মূল বেদীতে উঠা প্রসঙ্গে আর্ন্তজান্তিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন কমিটির সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, বারবার বিএনপির কাছ থেকে এরকম ব্যবহার একেবারেই অপ্রত্যাশিত। তাদের জেনে আসা উচিত শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারের কোথায় পর্যন্ত উঠা যায়।