বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতা তারেক রহমান এবং বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেট এর কথিত প্রধান তামিম চৌধুরি ওরফে শেখ আবু ইব্রাহিম আল হানিফের মধ্যে গোপন যোগাযোগ সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে।
২০০৮ সাল থেকে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেক রহমান ২০১২ সালে প্রথম বি এন পির একজন কর্মীর মাধ্যমে তামিম চৌধুরির সাথে যোগাযোগ করেন। তারেক শেখ মুজিবর রহমানের পলাতক একজন হত্যাকারীর সাথেও যোগাযোগ করেন। একটি গোয়েন্দা সংস্থার মতে, তারেক ও তামিমের প্রাথমিক আলাপ ছিল সাধারণ, যেখানে তামিম কানাডিয়ান পুলিশের দ্বারা হেনস্থা হবার ঘটনায় আতংক প্রকাশ করেন এবং এই হেনস্থাকে বর্ণবাদী বলে অভিহিত করেন। তামিম তামান্না ছদ্মনামে তারেকের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখেন, কানাডা ত্যাগ করে ইরাকে আই এস এ যোগদান করা পর্যন্ত। তারেক রহমানও কনিকা ছদ্মনামে তামান্নার সাথে যোগাযোগ করতেন। কম্পিউটারে লিখিত বার্তা আদান প্রদান হত তাদের মধ্যে। তামিমের মেসেজ প্রথম তুরস্কে পৌছাতো, সেখান থেকে ইমেইল বা কুরিয়ারে করে লন্ডন, সেখানে কেউ একজন নিজ হাতে তারেকের কাছে এই বার্তা পৌছে দিত।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে তারেক রহমান ওরফে কনিকা, তামিম চৌধুরি ওরফে তামান্নার কাছে একটি চিঠি লেখেন। কিন্তু সেই চিঠি মধ্যপ্রাচ্যের একটি গোয়েন্দা সংস্থার হাতে পড়ে। ২ পৃষ্ঠার চিঠিতে তারেক (কনিকা), তামিম (তামান্না)কে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে সম্বোধন করেছেন। তারেক লিখেছিলেন, ‘আমার দেশের অবৈধ শাসকেরা মালাউনদের (হিন্দুদের সম্বোধন করতে উগ্র মুসলিমদের ব্যবহৃত গালি বিশেষ) ১০০ ভাগ সমর্থন পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠছে। যেহেতু তুমি একটি মহান লড়াই লড়ছো কাফির (অবিশ্বাসী)দের বিরুদ্ধে, তোমার উচিৎ মালাউন এবং আমাদের প্রতিবেশি দেশের ব্যাপারে চিন্তা করা এবং সেখানকার আমাদের মুসলিম ভাইদের জন্য কিছু করা। গোমাংস খাওয়ার জন্য যেভাবে সেখানে মুসলিমদের জবাই করা হচ্ছে, কোন আত্মসম্মানজ্ঞান সম্পন্ন মুসলিম তা সহ্য করতে পারে না।
পুরো চিঠি জোগাড় করা সম্ভব না হলেও জানা গেছে যে চিঠিটিতে ৮টি প্যারায় ২,৩৭৮টি শব্দ ছিল।
সূত্রটি আরো জানায়, তারেক ইসলামিক স্টেট কে সমর্থন দেবার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন, যদি তারা বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম এর বিস্তৃতি ঘটায়। তারেক রহমান বাংলাদেশ শব্দটি না লিখলেও কয়েক জায়গায় আমার দেশ বা আমাদের দেশ কথাটি উল্লেখ করেন। তিনি ইন্ডিয়া শব্দটিও ব্যবহার করেন নি, বরং সব জায়গায় মালাউনদের দেশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক তামিম চৌধুরি ইসলামিক স্টেটের একজন শীর্ষ নেতা, যিনি বাংলাদেশে পরিচালিত আই এস এর তথাকথিত অপারেশন এর নেতৃত্ব দান করেন। তার লেখা ও সাক্ষাৎকার আই এস এর মুখপাত্র দাবিক এ নিয়মিত প্রকাশ হয়ে থাকে।