খালেদা-তারেক দূরত্ব বাড়ছে!

0
2

জাতীয় কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে ‘দূরত্ব’ বেড়েছে। দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের পর থেকেই তাদের মধ্যে সাংগঠনিক বিষয়সহ নতুন কমিটি গঠন নিয়ে কোনো কথাবার্তাই হচ্ছে না। দলের কোনো নেতা টেলিফোন করলেও খুব একটা সাড়া দিচ্ছেন না তারেক। নিয়মিত মনিটর করাও ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। দলীয় কাউন্সিলের পর নিজেকে গুটিয়ে রেখেছেন তিনি। তরুণ নেতাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাউন্সিলে দলের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে দলে কো-চেয়ারম্যানের পদ সৃষ্টি না করা এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানকে সুনির্দিষ্ট ‘বিশেষ সাংগঠনিক ক্ষমতা’ না দেওয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের ‘উপদেষ্টা পরিষদ’ যুক্ত না করায় মনঃক্ষুণ্ন হয়েছেন তারেক রহমান। দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা ও জ্যেষ্ঠপুত্রের সঙ্গে কথা বলতে শিগগির দলের একজন সিনিয়র নেতাকে লন্ডন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খালেদা জিয়া। ঢাকা ও লন্ডনের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, তারেক রহমান যাদেরকে কমিটিতে ঢুকাতে বলেছিলেন তাদের দুই একজন ছাড়া কেউই নতুন কমিটিতে স্থান না পাওয়ায় তারেকের এই ক্ষোভ।  শোনা গেছে, তারেক রহমান যাদের কাছ থেকে পদ দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছেন, তাদের তোপের মুখে আছেন।  সরাসরি তাকে কিছু না বলতে পারলেও দলের তারেকের প্রভাব কমেছে বলে গুঞ্জন উঠেছে।

বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, দলের হাইকমান্ডের মধ্যে ‘দূরত্ব’ তৈরি হওয়ায় নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনসহ সার্বিকভাবে দল পরিচালনায় সুযোগ নিচ্ছে দলের একটি ‘স্বার্থান্বেষী সিন্ডিকেট’। ওই সিন্ডিকেটে রয়েছেন দলের মধ্যম সারির নেতা ও গুলশান কার্যালয়ের প্রভাবশালী কর্মকর্তারা। তাদের বিরুদ্ধে দলের নতুন কমিটি গঠনে অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। একইসঙ্গে ইউপি নির্বাচনে ব্যাপক মনোনয়ন-বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে কোনো কোনো নেতার বিরুদ্ধে। ওই সিন্ডিকেটের ঘনিষ্ঠ দলের কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুর ইসলাম টিপুর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ‘সন্দেহজনক’ লেনদেন হওয়ার খবর দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। বিগত এক বছরের ব্যাংক লেনদেনের বিবরণী দেখে বিএনপির অনেক নেতাই বিস্ময় প্রকাশ করেন।

সূত্র জানায়, দলের নেতাদের একটি অংশ ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের আগে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদটি বাদ দিয়ে ‘কো-চেয়ারম্যান’ পদ সৃষ্টির দাবি তুলেছিলেন। একইসঙ্গে ওই পদের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু দায়িত্ব গঠনতন্ত্রে উল্লেখ করার দাবি তুলেছিলেন তারা। চেয়ারপারসনের পাশাপাশি কো-চেয়ারম্যানেরও একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের প্রস্তাব করেছিলেন তারা। বিষয়টি নিয়ে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদের বাসায় গঠনতন্ত্র সংশোধন উপকমিটির হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে। ওই বৈঠকে চেয়ারপারসনের অন্য উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আজমের সঙ্গে ইকবাল হাসান টুকু ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপনের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি খালেদা জিয়াকেও জানানো হয়।

এদিকে মহাসচিব হিসেবে তারেক ফখরুল ইসলামকে চাননি একথা খালেদাকে জানানোর পরও ফখরুলকে মহাসচিব নির্বাচিত করায় তাদের মধ্যে টেলিফোনে বাগবিতণ্ডা হয়েছে বলেও জানা গেছে।  একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে খালেদা তারেক রহমানকে দল নিয়ে বেশী মাথা না ঘামাতে বলেছেন।  এতে ক্ষুব্ধ হয়েই মূলত তারেক রহমান দলের সব কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছে।

comments

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here