বিএনপির কউন্সিল সামনে রেখে বিভিন্ন পদ প্রার্থীরা ছুটে বেড়াচ্ছেন বিএনপির দুই অফিস নয়াপল্টন ও গুলশান-এ ।এরই মধ্যে গুলশান অফিসের প্রভাবশালী কর্মকর্তা এবং কতিপয় নেতাদের বিরুদ্ধে উঠেছে পদ বাণিজ্যের অভিযোগ ।
দীর্ঘ সাত বছর পর হচ্ছে কাউন্সিল।এরপর আবার কবে কাউন্সিল হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। এবার কেন্দ্রীয় কমিটির আকার বাড়ছে। তাই সুযোগ হাত ছাড়া করতে চাইছেন না, পদ পেতে ইচ্ছুক অনেক নেতাকর্মী।অনেক তৃনমূলের কর্মী আছে যারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্য হতে চাইছেন। এই জন্য পদ পেতে নানা মহলে চেষ্টা তদবির চালাচ্ছেন। বিভিন্ন নেতা ও নেতাদের ঘনিষ্ঠজনদের কাছে ছুটছেন বায়োডাটা হাতে নিয়ে। চেয়ারপার্সন-সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার বাসায় চলছে পদ বিক্রি।
আরো জানা গেছে, কাউন্সিল উপলক্ষে চলছে চাঁদাবাজি। বিএনপির দুই সিনিয়র নেতা সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন, “তাদের নামে পদ বাণিজ্য হচ্ছে, চাঁদাবাজি চলছে”।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রেস ব্রিফিং-এ স্বীকার করেন, দেশ-বিদেশে আমার নাম দিয়ে কাউন্সিলের কথা বলে বিএনপির একটি মহল চাঁদা তুলছে। এর আগে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নামে বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঁদা নেওয়া হয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে যদি কেউ চাঁদা তোলে তা যেন অবশ্যই বিএনপির কার্যালয়ে পৌঁছে দেয়। দলের নেতাদের কারা কোন পদ পাবেন তা নির্ধারণ করা হবে কারা কত চাঁদা উঠিয়েছেন তার উপর।
গুলশান অফিসের প্রভাবশালী কর্মকর্তা এবং কতিপয় নেতারা পদ পাইয়ে দেয়ার নামে যে বাণিজ্য করছেন তা প্রায় সবারই জানা। কয়েকদিন আগে বৃহত্তর সিলেট জেলার এক বিএনপি নেতা তদবিরে গিয়েছিলেন দলের এক যুগ্ম মহাসচিবের বাসায়। সেখানে সন্ধান মেলে যুগ্ম মহাসচিবের এক সহকারীর। তিনি সিলেটের নেতাকে বলেন, তার কাঙ্ক্ষিত পদ পেতে গেলে দশ লাখ টাকা দিতে হবে। সিলেটের ঐ নেতা জানান, তিনি যে কয়জন নেতার বাসায় তদবিরে গেছেন তাদের মধ্যে দুই একজন বাদে সবাই ইশারা-ইঙ্গিতে মোটা অঙ্কের টাকা চাচ্ছেন। উপঢৌকন বা টাকা ছাড়া মনোযোগ দিয়ে কথাও শুনছেন না ঐসব সিনিয়র নেতা। মঙ্গলবার দিনে-রাতে দলের দুই অফিসে গিয়ে পদ-পদবীর জন্য তদবির করছেন এমন অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল ‘গিভ এন্ড টেক’ ছাড়া এবার পদ পাওয়ার কোনো আশ্বাস মিলছে না সিনিয়র নেতাদের কাছ থেকে। এই বাণিজ্যে এগিয়ে আছেন চেয়ারপার্সনের কিছুটা আস্থাভাজন বলে পরিচিত কয়েকজন নেতা। জানা যায়, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশেই সবকিছু হচ্ছে। আরো জানা গেছে, দীর্ঘকাল পরে এবারো প্রতিকূল পরিস্থিতিতেই কাউন্সিল এবং কমিটি হচ্ছে। এই কমিটিতে বিগত সময়ে কথিত আন্দোলনের নামে যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে তাদের রাখা হবে। যা নিশ্চিত করছেন দলের চেয়ারপার্সন এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান। তারেক রহমানের হাতে আছে সেইসব সন্ত্রাসীদের তালিকা।
বিএনপিতে যারা এবার দায়িত্ব পাবেন তাদের অবশ্যই খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পছন্দের হতে হবে, একথাও স্পষ্ট করা হয়েছে।