প্রতিদ্বন্দ্বিতাই বড় কথা নয়, রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকাই এখন বিএনপির লক্ষ্য-মির্জা ফখরুল(ভিডিও সহ)

0
13

আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে দ্বিমুখী চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বিএনপি। নির্বাচনে অংশ নেয়া এবং না নেয়া- উভয় ক্ষেত্রেই দলটির জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে ভবিষ্যৎ লাভ-ক্ষতির হিসাব-নিকাশ শুরু করেছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা।

তবে সব জল্পনা-কল্পনা শেষে বিএনপি যখন নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিল তখন বিপত্তি যেন আরো তীব্রতর হল। স্থানীয় পর্যায়ে প্রায় প্রতিটি পৌরসভায়ই দলীয়ভাবে প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে চরম টানাপোড়ন দেখা গেছে দলটিতে। কোথাও-ই তারা এককভাবে কাউকে মনোনয়ন দিতে পারেনি। দাঁড়িয়ে গেছে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী। কোথাও কোথাও বিএনপি থেকে চার, পাঁচজন বিদ্রোহী প্রার্থীও দেখা গেছে। সব মিলিয়ে চরম অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে আছে দলটি।

 

এদিকে বিএনপির কেন্দ্রীও নেতাদের সঙ্গে কথা বললে তারাও তাদের হতাশার কথা জানান। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বাংলাদেশ টাইমস কে বলেন, “দীর্ঘ সময় ধরে স্থানীও পর্যায়ে কোন কাউন্সিল না হওয়ায়ই এমনটা হয়েছে।”

বিদ্রোহী প্রার্থীদের জন্য নির্বাচনের ফলে প্রভাব পরবে কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, কোন এলাকায় আমাদের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলে দলীয় ভোটগুলো ভাগ হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে নিজেদের কোন্দলের জন্য আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা জিতে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। আমরা দলীয় কোন্দল মেটানোর জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।”তবে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এসব দলীয় কোন্দল সহসাই মেটানো সম্ভব হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

 

তাহলে দলীয় কোন্দল না মিটিয়ে নির্বাচনে যাওয়া কতটা যৌক্তিক হচ্ছে এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, “এই নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিলীন হয়ে যেত। তাই আমরা নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আওয়ামীলীগের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই বড় কথা নয়। রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকাই এখন বিএনপির লক্ষ্য।”

 

এরই মধ্যে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে মেয়র নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে মারামারিও হয়ে গেছে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে। সেসময় অনেককে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতেও দেখা গেছে। এসময় বগুড়া বিএনপি জেলা কমিটির সভাপতি বারবার ক্ষুব্ধ কণ্ঠে “মা-ছেলে মিলে বিএনপি কে ধ্বংস করে দিয়েছে”বলতে দেখা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বিএনপি নেতা বাংলাদেশ টাইমস কে বলেন, “এখানে স্রেফ বাণিজ্য হচ্ছে। যোগ্যদের কে বাদ দিয়ে যারা টাকা দিতে পারছে, শুধু তাদেরকেই মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে। স্থানীয় এই নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবি হবে। আর এর জন্য দায়ী থাকবে সিনিয়র নেত্রীবৃন্দের ‘নির্বাচন বাণিজ্য’।”

 

দুই দফা ব্যর্থ আন্দোলনের পর বিএনপির তৃণমূলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। সম্প্রতি কিছু কিছু করে সারা দেশে চলছে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া। কিন্তু অভ্যন্তরীণ কোন্দলসহ নানামুখী সমস্যায় তা এখনও শেষ হয়নি। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এসব কোন্দল আরও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

 

তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ না নিলে তৃণমূলের ভঙ্গুর নেতৃত্ব আরো হুমকির মুখে পড়তে পারে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের হতাশা আরও বাড়বে। তাই তৃণমূল নেতাকর্মীদের মানসিকভাবে চাঙ্গা করতেই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি। আর এক্ষেত্রে নির্বাচনের ফলাফল নিয়েও সরকার বিরোধী আন্দোলনের একটা ইস্যু পাওয়া যাবে, যা বিএনপিকে নতুন করে রাস্তায় নামার উপলক্ষ্য এনে দিবে বলে মনে করেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

comments

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here