সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার চিরায়ত ভঙ্গিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো কিছু অতিরঞ্জিত এবং ভিত্তিহীন তথ্য তুলে ধরে দাবি করেন, দেশের মানুষ যখন দুর্বিষহ অবস্থায় আছে, ঠিক তখন সরকারের সচিবদের জন্য বিলাসবহুল বাড়ি ও সুইমিং পুল নির্মাণের পেছনে বিপুল অর্থব্যয় করা হচ্ছে… ইত্যাদি। এ প্রসঙ্গে তিনি প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার পত্রিকার কিছু ভিত্তিহীন খবরও তুলে ধরেন নিজের বক্তব্যের সপক্ষে।
বাস্তবতা হচ্ছে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের জন্য নির্মিতব্য সরকারি বাড়িতে সুইমিং পুল নির্মাণের সংবাদটি সঠিক নয়। গত ৩১শে অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
মন্ত্রীপরিষদ সচিব বলেন, মূলত দুই সচিবের বাড়ির প্রস্তাবটি চূড়ান্ত নয়। আর চূড়ান্ত হলেও সেখানে কোনো ব্যক্তিগত সুইমিং পুল থাকছে না।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এটা আলোচনায় আসছে তিন-চার বছর আগে। আর তা নির্দিষ্ট করে কারও বাড়ি করার জন্য না। এমনকি ইস্কাটন গার্ডেন অফিসার্স কোয়ার্টারে যে ৬টি বড় ভবন আছে, সেগুলো ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এগুলো সেই ১৯৫০ সালের সময়ের বাড়ি। আসলে সবগুলোই নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। ইতোমধ্যেই সংসদ উপনেতার বাড়ি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে। কারণ, এগুলো সেই ১৯৪০, ১৯৪৫ সালের বাড়ি। বাড়িগুলো একটা একটা করে সব নতুন করে তৈরি করা হবে।
[মির্জা ফখরুলের গুজবঃ “আমাদেরকে বলা হচ্ছে কৃচ্ছতাসাধনের কথা বলে সচিবদের জন্য বিলাসবহুল বাড়ি ও সুইমিং পুল।” এই দাবির সত্যতা কি? ]
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন সেখানে যেকোনও ধরনের সুইমিং পুলের কথা পরিষ্কার নিষেধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যদি সুইমিং পুল নির্মাণ করতেই হয়, তাহলে ওখানে কয়েশ’ বাড়িঘর আছে, যেখানে সরকারি কর্মকর্তারা বসবাস করেন। তাদের সবার ব্যবহারের জন্য একটি কমন সুইমিং পুল করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।’
এ সময় খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বাড়িতে বাড়িতে সুইমিং পুল নির্মাণ করে তা নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা যাবে না। ওখানে যে ৫০০-৬০০ কর্মকর্তা আছেন, তাদের সবার জন্য কমন কোনও সুইমিং পুল নির্মাণ করা যায় কি না, সেটা বিবেচনার করার কথা বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে সেখানে যাদের অ্যালটমেন্ট আছে, তারা এবং তাদের সন্তানরা ওখানে সাঁতার কাটার সুযোগ পাবেন। কারণ, অফিসার্স কোয়ার্টার্সে তো বাইরের লোক আসতে পারবেন না।’
[মির্জা ফখরুলের গুজবঃ “আমাদেরকে বলা হচ্ছে কৃচ্ছতাসাধনের কথা বলে সচিবদের জন্য বিলাসবহুল বাড়ি ও সুইমিং পুল।” এই দাবির সত্যতা কি? ]
উল্লেখ্য, রাজাকার তালিকার ৭১০নং-এ থাকা রুহুল আমিন চখা রাজাকারের পুত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া বক্তব্যের বিপরীতে পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে সচিবদের বাড়ি ও সুইমিং পুল নির্মাণ প্রসঙ্গে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছেন। যাতে ইন্ধন যুগিয়েছে তথ্যসন্ত্রাসী প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার গং।
আরও পড়ুনঃ
বাংলাদেশের মানবাধিকারের পরিস্থিতি মোটেই উদ্বেগজনক নয় – জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণে হতাশায় বিএনপি
যুক্তরাষ্ট্র: ‘সভ্য’ দেশের পুলিশের প্রশ্নবিদ্ধ কর্মকাণ্ড
বিএনপির ২০০১ সালের নির্বাচনী ইশতেহার ২০ ভাগই পূরণ করতে পারেনি। তারা কিভাবে রাষ্ট্র সংস্কার করবে?