এক শ্রেণির মানুষ বলছে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাচ্ছে। ধসে পড়ছে দেশের অর্থনীতি। তারা এসবের বিচার করছে ডলারের সাথে বাংলা টাকার মুদ্রা বিনিময়ের হার দেখে। ১ ডলার সমান ৯৪ টাকা চলছে বর্তমান।
কিন্তু আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী উন্নয়নের বিচার মুদ্রার মান দিয়ে নির্ধারণ করা হয় না। কিন্তু একটি প্রতিক্রিয়াশীল চক্র কোনো কিছু না বুঝেই এটা করছে। মুদ্রা বিনিময় হার তালিকা থেকে জানা যায়, ১ ডলার সমান জাপানি ইয়েন ১৩৩ টাকা। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের এক ১ ডলারের জাপানের ১৩৩ টাকা। যা বাংলাদেশের চেয়েও বেশি। এর মানে কী জাপানের উন্নয়ন বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ?
[ডলারের বিপরীতে মুদ্রার দরপতন ঘিরে চলছে গুজব]
এরপর দেখা যাক উত্তর কোরিয়ার অবস্থা। নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত এই দেশটির মুদ্রা মান ১ ডলার সমান ৯০০ কোরিয়ান ওন। এর মানে কী তারা আমাদের চেয়েও অনুন্নত? আর এর পাশের দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার মুদ্রা মান ১ ডলার সমান ১ হাজার ৩০০ ওন। এভাবে যদি দেখা হয় দেখা যাবে ইরানের মুদ্রা বিনিময় হার ১ ডলার সমান ৪২ হাজার ইরানিয়ান রিয়াল! ভাবতে পারেন?
তাহলে আমাদের ১ ডলার সমান ৯৪ ডলার দেখে কীভাবে দেশের ধস নামাচ্ছে বলে চাউর করেছে ওই চক্র, তা বুঝে উঠতে পারছেন না দেশের বুদ্ধিজীবী মহল। তারা বলছেন, ডলারের সাথে তুলনা করে উন্নয়ন বিচারের আগে বেশ কিছু তথ্য জানা দরকার।
মূলত রিজার্ভ, অবকাঠামোগত নির্মাণ, শিক্ষার হার, বেকারত্ব হ্রাস, নারীর ক্ষমতায়ন, মাথাপিছু আয় এবং ঋণের পরিমাণ বিবেচনায় নিয়ে দেশের উন্নয়নের মান বিচার করা উচিত।
আরও পড়ুনঃ
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত
প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী এবং যুগান্তকারী যে সিদ্ধান্তগুলো বৈশ্বিক এই ক্রাইসিস মোমেন্টে পথ দেখাচ্ছে
শুধুমাত্র কি বাংলাদেশে দৈনিক এক ঘন্টা করে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং হবে?
[ডলারের বিপরীতে মুদ্রার দরপতন ঘিরে চলছে গুজব]
আর কোনো একটি দেশের মুদ্রা অন্য দেশে গিয়ে কত হবে, তা নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের উপর। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো ‘ব্যালেন্স অফ পেমেন্ট’ তত্ত্ব। এ তত্ত্বে বলা হয়, কোনো একটি দেশের মুদ্রার চাহিদা ও যোগানের উপর ভিত্তি করে সে মুদ্রার মান নির্ধারিত হবে। ‘পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি (পিপিপি)’ তত্ত্ব নামে ‘ব্যালেন্স অফ পেমেন্ট’ তত্ত্বের পাশাপাশি আরেকটি বিষয় রয়েছে, যা মুদ্রার মান নির্ধারণে ভূমিকা রাখে।
আরও পড়ুনঃ