আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা এখন তলানিতে,কারণ বিএনপি-জামায়াত অন্যান্য জঙ্গিবাদ দলগুলোকে মদদ দেয় এবং পৃষ্ঠপোষকতা করে।
বিএনপির ১৪ বছরের বেশি সময় ক্ষমতার বাইরে। শুধু যে ক্ষমতার বাইরে তা নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা এখন তলানিতে। পৃথিবীতে ক্রিয়াশীল যে শক্তিধর রাষ্ট্র গুলো রয়েছে তার কারও কাছেই বিএনপি গ্রহণযোগ্য না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেমন তারেককে একজন ভয়ংকর দুর্বৃত্ত বলে মনে করে এবং সেই অবস্থান থেকে এখনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসেনি। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার আনুষ্ঠানিক নীতি এবং কৌশলে যেমন বলেছে, বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে আছে, পক্ষান্তরে বিএনপি জঙ্গিবাদকে লালন করছে। ঠিক তেমনি চীনও মনে করে যে, বিএনপির সঙ্গে এই মুহূর্তে সুসম্পর্কের কোনো প্রয়োজন নেই।
ইউরোপের দেশগুলো মনে করে যে, বিএনপি জঙ্গিবাদ এবং মৌলবাদের ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান সুস্পষ্ট নয়। এখনো বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে আছে। আবার ভারত আনুষ্ঠানিকভাবেই জানিয়ে দিয়েছে যে, যতক্ষণ বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে থাকবে এবং যতক্ষণ বিএনপির নেতৃত্বে তারেক জিয়া থাকবে ততক্ষণ তারা বিএনপির সঙ্গে কোনো রকম সুসম্পর্কে যাবেনা। একটি রাজনৈতিক দল আন্তর্জাতিকভাবে এত দেউলিয়া অন্যকোন সময় হয়নি।
আরও পড়ুনঃ বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে জনমনে
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিএনপির এই একাকীত্বের শুরু হয়েছিল ২০০১ সালের পর থেকে। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসেছিল ভারতের আনুকূল্য নিয়ে এবং ভারতের সহযোগিতায়। সেই সময় বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া ভারতে গিয়েছিলেন এবং ভারতে গিয়ে গ্যাস বিক্রি সহ নানা বিষয়ে মুচলেকা দিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি একের পর এক প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে। সর্বশেষ টাটার বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে তারেক অবিশ্বাস্য রকমের চাঁদা দাবি করলে টাটা পিছু হটে যায়। এরপর ১০ ট্রাক অস্ত্রের ঘটনা এবং বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান, সবকিছু মিলিয়ে ভারতের সঙ্গে বিএনপির অবিশ্বাস তৈরি হয় এবং এই অবিশ্বাসের ধারা এখনো বহাল রয়েছে। বিএনপিকে এখনও একটি গণতান্ত্রিক গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক দল হিসেবে মনে করেন না ভারত।
[আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা এখন তলানিতে]
চীনের সঙ্গে একসময় বিএনপির সুসম্পর্ক ছিল। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির সাথে যতটা না সম্পর্ক ছিল, তার বেশি ছিল বিএনপির কয়েকজন নেতার সঙ্গে। এদের মধ্যে ছিলেন- তরিকুল ইসলাম, সাদেক হোসেন খোকা, আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া। এদের চলে যাওয়ার পর নতুন যারা বিএনপিতে এসেছেন তাদের সঙ্গে চীনের ওই সখ্যতা নাই। বরং চীন এখন বিএনপির চেয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার নীতিতেই বিশ্বাস করে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০০৭ সালে তারেক জিয়াকে ভিসা দিতে অস্বীকার করেছিল। সেই সময় তৎকালীন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত গীতা পাসি তারেক জিয়াকে একজন দুর্বৃত্ত হিসেবে অভিহিত করেছিলেন এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী চক্রের সঙ্গে তার যোগাযোগের কথা বলেছিলেন। সেই ধারা থেকে এখন পর্যন্ত পরিবর্তন হয়নি। বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বসে যে সমস্ত বিএনপি-জামায়াতপন্থীরা যে সমস্ত বাংলাদেশ বিরোধী তৎপরতা চালাচ্ছে, তাদেরকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নজরদারির মধ্যে রেখেছে বলেও জানা যায়।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন সবসময়ের সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, উগ্র মৌলবাদ বিরোধী এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন মনে করে যে, বিএনপি-জামায়াত অন্যান্য জঙ্গিবাদ দলগুলোকে মদদ দেয়, পৃষ্ঠপোষকতা করে। ফলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নও বিএনপির প্রতি তেমন কোনো সহানুভূতি দেখাতে পারছে না।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্বে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যারা সক্রিয়, গুরুত্বপূর্ণ দেশ তারা কেউই বিএনপির প্রতি এখন পর্যন্ত আস্থাশীল নয়। আর বিএনপি যদি বড় ধরনের কোনো আন্দোলন করতে চায় তাহলে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া এটি অসম্ভব বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুনঃ
গর্ত থেকে বেরিয়ে আসছে জামায়াত, গোয়েন্দা নজরদারি শুরু
বিএনপির হয়ে নির্বাচন করতে অনাগ্রহী নেতারা
‘৭৫ এর পর আওয়ামী লীগের সঙ্গে যা যা করেছি, তার ফল ভুগছি’- মৃত্যুশয্যায় বলে গিয়েছিলেন তরিকুল ইসলাম