বিএনপি-জামাতের সঙ্গে বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সময় মিটিং এর খবর বহুত পুরানো। বিএনপি-জামাত শাসনামলে শুধু দেশে নয় আন্তর্জাতিক মহলেও এ নিয়ে সমালোচনা হয়েছে অনেক। ধারনা করা হয় বিএনপি শাসনামলে আল-কায়েদার বর্তমান প্রধান আইমান আল-জাওয়াহিরি তিনবার এদেশে এসেছিলেন। এ বিষয়ে গোয়েন্দাদের কাছে নির্ভরযোগ্য তথ্যও আছে বলে দাবী করা হয়। সম্প্রতি বিএনপির জঙ্গি কানেকশনের ব্যাপারে নতুন করে কথা উঠেছে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতা ছাড়া কোন জঙ্গি কর্মকাণ্ড না থাকলেও বিদেশী দুই নাগরিক হত্যার মাধ্যমে এই বিষয়টি নিয়ে আবার নতুন করে ভাবতে হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন “আইএস” দুই বিদেশী নাগরিক কে হত্যার দ্বায় স্বীকার করায় প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশে এই সংগঠনটি কি তাদের প্রভাব বিস্তার করতে যাচ্ছে কিনা। যদিও দেশীও গোয়েন্দা সংস্থার দাবী, এই দুই বিদেশী নাগরিক কে হত্যার সঙ্গে “আইএসআইএস” এর কোন সম্পৃক্ততা নেই। সেক্ষেত্রে কিছু প্রশ্ন এসেই যায়, কেন হঠাৎ বিদেশী নাগরিক হত্যা! এটা কি নতুন করে কোন রাজনৈতিক কুটচাল? বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে অস্থিতিশীল এবং ছোট করতে পারলে লাভটা কাদের। টানা তিনমাস সহিংস আন্দোলন করে ব্যার্থ বিএনপি-জামাত জোট কি নতুন করে মাঠে নামার চেষ্টা করছে কিনা। তাছাড়া জামাত তাদের দলের নেতাদের বাচাতে মড়িয়া হয়ে উঠেছে। যেখানে জামাতের কেন্দ্রীয় প্রায় সকল নেতাই যুদ্ধাপরাধের মামলায় আটক রয়েছে এবং বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বিদেশী হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিলেও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের মত করে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তদন্ত কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানা যায়, এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে একটি নির্দৃষ্ট রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততার বিষয়ে তারা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছেন।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিষয়ক অধ্যাপক আনিস রায়হানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততার তথ্যকে যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত বলে মত দেন। তিনি বলেন, হঠাৎ খালেদা জিয়ার লন্ডন গমন এবং তার পরপরই বিদেশী নাগরিক হত্যা এ দুটো বিষয়কে পাশাপাশি রেখে হিসেব করলে অনেক কিছুই প্রতিয়মান হয়ে যায়। তাছাড়া লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের সঙ্গে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সখ্যতা সবারই কমবেশী জানা।এ বিষয়ে জানিয়ে রাখা ভাল তারেক রহমান দুবাই গিয়ে দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং এখনো বিভিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন বলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তথ্য রয়েছে। এসব দিক বিবেচনায় রেখেই তদন্ত কর্মকর্তাদের চদন্ত চালিয়ে যাওয়া উচিৎ বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে লন্ডনে বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে খালেদা জিয়ার সফরসূচি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তারা নির্দৃষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি। লন্ডন বিএনপির সিনিয়র নেতা রফিকুজ্জামান বলেন, তারা খালেদা জিয়ার সফরসুচি সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেন না। এমনকি খুব অল্প কয়েকজন নেতাই খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছেন। কেন এমন গোপনীয়তা এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, উপর মহলের সব খবর তো আর আমরা পাইনা। লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের দুটি মিটিংও হয়েছে বলে তিনি জানান।
খালেদা জিয়া লন্ডনে যাওয়ার পর থেকেইতারেক রহমান কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে যাচ্ছেন। একধিকবার উচ্চপর্যায়ের মিটিং হলেও, সেখানে কারা কারা উপস্থিত ছিল সে বিষয়ে লুকোচুরি করা হচ্ছে। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা যায়, দুটি মিটিং-ই দুই বিদেশী নাগরিক হত্যার ঠিক আগেরদিন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বিদেশী নাগরিক হত্যার সঙ্গে তারেক রহমান ও বিএনপির জড়িত থাকার বিষয়টি আরো ঘনীভূত হচ্ছে।