দেশের সার্বিক উন্নয়নযজ্ঞে কোণঠাসা হয়ে পড়া বিএনপি-জামায়াত জোট বেশ অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য নতুন কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। দুর্নীতি, অর্থ পাচার, জঙ্গি সম্পৃক্ততা ও নৈতিক স্খলনের দায়ে দণ্ডিত, পলাতক এবং চাকরিচ্যুত কর্নেল শহীদ উদ্দিন খানকে দিয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের উস্কে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে এই দেশবিরোধী চক্র। এক্ষেত্রে তাদের সহযোগী হিসেবে সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে বিদেশে অবস্থানকারী তথাকথিক সাংবাদিক কনক সরোয়ার। বিএনপি-জামায়াতের মুখপাত্রদের নিয়ে ইন্টারনেটে নিয়মিতই উস্কানিমূলক ও রাষ্ট্রবিরোধী প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা, সরকার, প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু এবং সেনাবাহিনীকে হেয় করে মনগড়া আলাপের সময় কখনো চিৎকার করে আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করে গালিগালাজ করতে আবার কখনো হিংস্রভাবে হাসতে দেখা যায় তাদের।
লন্ডনে বসে মধ্যরাতে কনক সরোয়ারের সঙ্গে অনলাইন কনফারেন্সে উপস্থিত হয়ে দেশে অভ্যুত্থান ঘটানোর ঘোষণা দিতে দেখা যায় পদচ্যুত সেনা কর্মকর্তা শহীদ উদ্দীন খানকে। মূলত বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুখপাত্র হিসেবে সক্রিয় এই শহীদ উদ্দীন চাঁপাইনবাবগঞ্জে চাকরিরত অবস্থায় বিএনপি নেতা হারুন ও বিএনপি নেত্রী পাপিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক রেখে চলতেেন। এই চক্রের অপকর্ম ফাঁস হয়ে পড়ায় কর্মক্ষেত্রে সমালোচিত হতে হয় তাকে। পরবর্তীতে তিনি লাগামহীন হয়ে পড়লে একপর্যায়ে নৈতিক স্থলনের জন্য সেনাবাহিনীর চাকরি হারান। এরপর জঙ্গি কানেকশান, অবৈধ অস্ত্র রাখা, কর ফাঁকি এবং অর্থ পাচারের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যান। কিন্তু থেমে নেই তিনি। চাকরি হারানোর ক্ষোভ থেকে সেনাবাহিনীর গর্বিত সদস্য, পুলিশ বাহিনী এবং বাংলাদেশ সরকারকে নিয়ে ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠেন এই কর্মকর্তা। বিদেশে বসে কখনো তিনি সরকারের বিরুদ্ধে সেনাসদস্যদের উস্কে দেন, আবার কখনো সেনানিবাস ও সেনাবাহিনীকে কটূক্তি করে অবমাননাকর বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশের একজন ব্যক্তির প্রশংসা শোনা যায় তার মুখে, তিনি হলেন দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালো জিয়া।
একাধিক ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বাংলাদেশের সংবিধান ও গণতন্ত্রকে হত্যা করার জন্য সেনাসদস্যদের মাঠে নামতে নিয়মিত আহ্বান জানায় এই চক্রটি। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কোভিড মোকাবিলায় সরকারের সফলতা, মানুষের ক্ষুধামুক্তি এবং অঁজপাড়াগায়ে পর্যন্ত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি পৌঁছে দেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কিছু বলার সুযোগ না থাকায় তাকে নিয়ে বানোয়াট নোংরা গুজব ছড়াচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের এই এজেন্টরা। চাকরিচ্যুত এই সেনা কর্মকর্তার বলছেন যে, ক্যান্টনমেন্টে বিশাল এক বাড়ি বানানো হয়েছে। সেই বাড়ি ভরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টাকা আর অলংকার রাখা হয়েছে। নিজের চোখে সেসব দেখেছেন বলেও গুজব ছড়াচ্ছে তিনি। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ক্যান্টনমেন্টের ভেতর কারো ব্যক্তিগত বাড়ি বানানোর কোনো সুযোগ নেই এবং এরকম কোনো ঘটনা দেশের কোথাও ঘটেনি।
১৭ কোটি টাকা আয়কর ফাঁকির মামলায় ৯ বছরের জেল এবং জঙ্গি সম্পৃক্ততা ও অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এই চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা শহীদ উদ্দীনের মূল শুধু সরকারের ওপর না, সেনাবাহিনীতে চাকরিরত দেশপ্রেমিক সেনা সদস্য ও সেনানিবাসকে আক্রমণ করতেও ছাড়ছেন না তিনি। নিয়মিতই তিনি বলছেন যে, ক্যান্টমেন্টে টাগ অব ওয়ার চলে। সেনা বাহিনীর তরুণ সদস্যদের প্রফেশনালিজম শেষ হয়ে গেছে।
বিদেশের মাটিতে বসে বাংলাদেশ সরকার এবং আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে নিয়ে যেভাবে গুজব ছড়াচ্ছে এই অশুভ চক্র। তারা বলছেন, দেশের পুলিশ ও সেনা সদস্যরা জোরে সাউন্ড দিয়ে সবাই সমবেত হয়ে এখন তাদের বক্তব্য শোনে এবং করতালি দেয়। পুলিশ ও আর্মির সদস্যরা তাদের ফোন দেয় এবং মাঠে নামতে বলে। তারা চাইলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে বলে গুজব ছড়াচ্ছে তারা।
জনগণের ভোটের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসা শেখ হাসিনা সরকারকে রক্তারক্তির মাধ্যমে অপসারণ এবং খালেদা জিয়াকে ক্ষমতায় আনার জন্য মানুষকে মোটিভেট করতে বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাতে দেখা গেছে এই শহীদ উদ্দীনকে। এছাড়া সেনাবাহিনী ও পুলিশের ব্যাপারটা তিনি ম্যানেজ করছেন বলেও দাবি করেন। এমনকি দেশের সংবিধানের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে তিনি নিজে একটা সংবিধান রচনা করেছেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন।
পদ্মা সেতু নিয়ে নতুন গুজব ছড়াচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের এজেন্টরা
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পথ ধরে পদ্মা সেতু বিষয়ে নতুন গুজব ছড়ানোর চেষ্টাও করেছেন শহীদ উদ্দীন। সরকারের সাফল্যে দিশেহারা হয়ে এখন নতুন গুজব ছড়াতে মাঠে নেমেছে বিএনপি-জামায়াতের এজেন্টরা। মানুষ এই সেতু দিয়ে চলাচল করতে পারবে না বলে হাস্যকর কথা বলতেও দ্বিধা করছে না এরা। শহীদের দাবি, এই সেতু কোনোমতে নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ এই সেতু দিয়ে চলাচল করতে পারবে না।
এর আগে, দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষ যাতে পদ্মা সেতুর উপকার ভোগ করতে না পারে, সেজন্য পদ্মা সেতু নির্মাণ বানচাল করতে চেয়েছিল বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা চালাতে মোটা অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করে লবিস্ট নিয়োগ করে তারা। তখন খালেদা জিয়া বলেছিল, আওয়ামী লীগের আমলে এই সেতু হবে না। আওয়ামী লীগ সরকার এই সেতু করতে পারবে না।