১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠা পাওয়া দল বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলে নিজেই যেন নানা সংকট ও দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে। বিদেশে পলাতক রয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান। যারা নেতৃত্বে আছেন তারা দল পরিচালনায় স্পষ্ট বা শক্তিশালী সিদ্ধান্তও দিতে পারছেন না। এমন অবস্থায় অদূর বা দূর ভবিষৎ ভালো নয় এমন শঙ্কায় আছেন দলটির নেতাকর্মীরা। এর মধ্যে কেন্দ্রের নেতৃত্ব ও দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়ে তৃণমূলের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েই চলছে। দলটির কয়েকটি মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বললে তারা এ ক্ষোভ ও হতাশার কথা জানান।
এদিকে করোনা সংকট মোকাবিলায় সারাদেশের মানুষ একসাথে কাজ করছে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে বিএনপি মাঠে নেই। দলের মধ্যে রয়েছে অন্তকোন্দল। সব মিলিয়ে সংকট কিংবা মহামারির এমন দিনে বিএনপির সিনিয়র নেতারা মাঠে নেই, কর্মীদের খোঁজ নিচ্ছেন না সিনিয়র নেতারা, ফলে সৃষ্টি হচ্ছে তৃণমূলের কর্মীদের ক্ষোভ।
রাজনীতিতে বিএনপি দৃশ্যত দুর্বল হয়ে পড়েছে অনেক আগেই , এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর থেকে রাজনীতিতে বিএনপি’র শক্ত অবস্থান দেখা যায়নি। ২০১৫ সালের প্রথম দিকে দলটির টানা অবরোধ কর্মসূচী রাজনৈতিক সফলতার মুখ দেখেনি।
অপরদিকে কেন্দ্র থেকে কমিটি চাপিয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে বলে জানা যায়। মানা হচ্ছে না সিনিয়র-জুনিয়র অভিমান করে নিষ্ক্রিয় অনেকে, বিদেশেও পাড়ি জমাচ্ছেন কেউ কেউ। বিএনপির তৃণমূল কমিটি পুনর্গঠন নিয়ে লেজেগোবরে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে রাজনীতির ব্যার্থতায় দলটি জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যেই বাড়ছে হতাশা অন্যদিকে ক্ষোভ বাড়ছে তৃণমূলে। তৃণমূলকে গুরুত্ব না দিয়ে দলের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারনেই আন্দোলন করা যাচ্ছে না বলে দলের নীতিনির্ধারকদের প্রতি ক্ষোভের কথা বলেন তৃণমূলের নেতারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রংপুরের এক নেতা বলেন, ‘আমরা বর্তমানে বিএনপির রাজনীতির কোন কূল কিনারা দেখছি না। তৃণমূলকে কাজে লাগাতে পারছে না কেন্দ্র। কেন্দ্র মনে করছে তারা ঠিক করছে কিন্তু তারা তো ভালো কিছু উপহার দিতে পারছে না।’
কেন্দ্রীয় নেতাদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বরিশালের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ‘পাতি শিয়াল’র উপমা টেনে বললেন, ‘এসি গাড়িতে ঘুরে ও এসি রুমে বসে বক্তব্য দিলে কোনকালেই আন্দোলন হবে না। জনগনকে আন্দোলনে নেওয়া যাবে না।’ কেন্দ্রীয় নেতারাই খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছেণ বলে দাবি করেন পিরোজপুরে জেলা বিএনপির একজন নেতা।
অভিযোগ রয়েছে, যোগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের পদ দেওয়ার কারণে অনেকেই দল ছেড়েছেন। কেউ বা রাজনীতি থেকে দূরে সরে রয়েছেন।