দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার মুক্তি ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করতে বারবার হুমকি দিলেও শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি বিবেচনা করে গোপনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিএনপি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার অনিশ্চিত ভাগ্য বিবেচনা করে এবং বিএনপির অস্তিত্ব রক্ষার বিষয়ে গভীর চিন্তা-ভাবনা করে তারেক রহমানের নির্দেশে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন মির্জা ফখরুলরা। আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বললেও শেষ পর্যন্ত বিদেশি বন্ধুরাষ্ট্র ও একাধিক দূতাবাসের অনুরোধে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানা যায়। নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে তিনশো আসনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২৩ দলীয় জোটের সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকাও প্রস্তুত করা হয়েছে। এদের মধ্যে খুলনা ৬ কয়রা-পাইকগাছা থেকে ধানের শীষের মনোনয়ন পাচেছন জামায়াত নেতা মাওলানা আবুল কালাম আজাদ। তার বিরুদ্ধে আগুনে পুড়িয়ে মানুষহত্যাসহ ১৩টি নাশকতা মামলা রয়েছে।
বিএনপির প্রার্থীদের বাদ দিয়ে জামায়াতের প্রার্থীতে নৌকা মনোনয়ন দেয়ায় অসেন্তোষ্ট বিএনপির নেতাকর্মীরা। এছাড়াও আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে রয়েছে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও।
এ বিষয়ে কয়রা উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমেরেজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, বিএনপিতে জনপ্রিয় ও যোগ্য প্রার্থী থাকার পরেও রাজাকারের দল জামায়াতে ইসলামি থেকে লোককে ধানের শীর্ষের মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। তবে বিষয়টি আমাদের জন্য লজ্জার। আমাদের যোগ্য প্রার্থী আছে।তাছাড়া তার বিরুদ্ভে ১৩টি মামলা রয়েছে। স্থানীয় যুবলীগ নেতা জাহাবাজ আলী মোল্লাকে হত্যা করে তার জমিদখল করে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এমন লোকের মনোনয়ন চাই না আমরা।
এছাড়াও নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাইকগাছা বিএনপির এক নেতা জানান, আমরা কোনো পেট্রোলবোমা মারিনি। আবুল কালাম আযাদের লোকেরা নাশকতা করেছে। তার দায়ে আমাদের জেল খাটতে হয়েছে।
২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জামায়াত-সমর্থিত আ খ ম তমিজউদ্দিন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর থেকে জামায়াত নেয়া আবুল কালাম আজাদ ও তার ঘনিষ্ঠজন ওয়াছার মোল্লা স্থানীয় একটি চিংড়ি ঘেরের হমি জমি দখলের পাঁয়তারা করতে থাকেন।
নির্বাচনের দুদিন পর আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনির লোকেরা এলাকা ছেড়ে গেলে যুবলীগ নেতা জাহাবাজ আলীর বাড়ির আঙিনায় ঢুকে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে তমিজ উদ্দিন ও আবুল কালাম আজাদের লোকেরা। স্থানীয়দের অভিযোগ জামায়াতের কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে জাহাবাজকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।