সাবেক প্রধান বিচারপতি এস এক সিনহা’র নামে সরকারের বিরুদ্ধে বই লেখার কাজে যারা সাহায্য করেছেন এমন একাধিক ব্যাক্তির নাম সামনে এসেছে। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানিয়েছে বইয়ের মূল লেখক হচ্ছেন ড: কামাল হোসেন এবং তাকে সাহায্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিয়নস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সাবেক বাসদ ছাত্রলীগ নেতা আলী রিয়াজ ও প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, মাস দুয়েকের একটু আগে কানাডা ছেড়ে সস্ত্রীক যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। বসবাসের জন্য বেছে নিয়েছিলেন সিলেটি অধ্যুষিত নিউ জার্সির প্যাটারসনকে। সেখানে ১৭৯, জেসপার স্ট্রীট একটি বাসার গ্রাউন্ড ফ্লোরে তিনি থাকছেন। বাসা থেকে খুব একটা বের হতেন না। ভাব এমন যে সারাদিন বইয়ের কাজ করছেন। কিন্তু বাস্তবে প্রথম আলোর যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি ইব্রাহিম চৌধুরী খোকেনের মাধ্যমে ঢাকা থেকে ড: কামাল হোসেন আসল লেখা বইয়ের পাণ্ডুলিপির ২০টি ফাইল পাঠায় প্রায় দেড় মাস আগে। বইটি লেখার পিছনে এবং অর্থায়ন করার পিছনে জামায়াতের হাত আছে বলে একাধিক সূত্র জানায়। তার প্রমান মেলে গত ৩রা আগষ্ট শুক্রবার যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামী মীর কাশেম আলীর ভাই মীর মাসুম প্যাটারসন গিয়ে এস কে সিনহা’র সাথে সাক্ষাত করে বই লেখা বাবদ সিনহাকে নগদ ৫০ হাজার ডলার দেন। এসময় মীর মাসুমের সঙ্গে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের টাইম টেলিভিশন ও বাংলা পত্রিকার সম্পাদক আবু তাহের। এছাড়াও ছিলেন সাংবাদিক মুনির হায়দার। বাকী অর্থ লেনদেন হয়, আগস্ট মাসের ৩ তারিখ ৫৫-৫৬ বে সাইড কুন্সে দন্ত চিকিৎসক ডাঃ বার্নাডের চেম্বারে। ৩ আগস্টের ডাঃ বার্নাডের চেম্বারের সিসিটভির ফুটেজে যা স্পষ্ট হয়ে যায়। এখানে উল্লেখ্য যে, মীর মাসুম এর সাথে থাকা আবু তাহেরের আশ্রয়েই ইসরাইলের গোয়েন্দা কর্মকর্তা মেন্দি এন সাফাদী সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ষড়যন্ত্র করেছিলো। আর মীর কাশিম আলীর বিচার শুরু হওয়ার পর থেকেই মীর মাসুম পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। বর্তমানে মীর মাসুম জামাতের সংগঠন মুসলিম ওম্মাহ (মুনা)’র প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করেছেন।
আর একটি সূত্র থেকে জানা যায় ড: আলী রিয়াজ একসময় মাহমুদুর রহমান মান্নার সাথে বাসদের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে তিনি বিএনপি জামাতের লবিস্ট হিসাবে কাজ করেছেন। তাকে দেশ থেকে সহায়তা করছেন চ্যানেল আইয়ের তৃতীয় মাত্রার উপস্থাপক জিল্লুর রহমান, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী ও বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন। এখানে আর উল্লেখ্য যে, গুলশানের হলি আর্টিজানের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার দিনই ড: আলী রিয়াজ সিএনএনসহ বিদেশী গণমাধ্যমে সাক্ষাতকার দিয়ে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশ পুরোপুরি এখন ব্যর্থ রাষ্ট্র। আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে’। যদিও বাস্তবে গোটা দুনিয়ায় এতো দ্রুততম সময়ে প্রিথবীর কোন দেশ সন্ত্রাসীদের হাত থেকে জিম্মি উদ্ধারের রেকর্ড নেই, যেটা বাংলাদেশ করেছে। দুইজন পুলিশ অফিসারসহ সরকারের একাধীক ব্যক্তি প্রাণ দিয়েছেন জঙ্গি দমনে।
সূত্র মতে, সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে কামাল গং সিনহা কে দিয়ে এমন বই লেখানোর উদ্যোগ নেন, তবে বইটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকে নানা মহলে সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে কামাল কে। এ বিষয়ে তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি কথা বলতে অস্বিকার করেছেন।