বিএনপির টার্গেট ১০০ আসন, ৭০ হলেও খুশি

0
3

নির্বাচন কমিশনের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী অক্টোবরের শেষ দিকে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে একাদশ জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে ধরে নিয়ে আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতিও শুরু করেছে।

মাঠের বিরোধী দল বিএনপি শিবিরে প্রকাশ্যে নির্বাচনের তেমন কোন কৎপরতা না থাকলেও তারাও বসে নেই। দলটি বিভিন্ন সময় সংবাদ সম্মেলন করে চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয় সরকারের দাবি জানিয়ে আসছে। সেই সঙ্গে নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, সেনা মোতায়েনের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি।

তবে এসবকিছুই রাজনীতি। সুস্পষ্টভাবে কিছু না বললেও অন্তরাল থেকে বিএনপি নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। সম্প্রতি তৃণমূলের নেতাদের দেয়া মতামতকে প্রাধান্য দিয়েই পরিকল্পনা সাজিয়ে যাচ্ছে প্রায় ১ যুগের বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি।

২০১৪ সালের মত হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে নারাজ এবার বিএনপির হাইকমান্ড। নিজেদের সাংগাঠনিক অবস্থা, মাঠের বাস্তব পরিস্থিতি এবং দলের সমন্বয়হীনতায় তারা কতটুকু সফল হবে তা নিয়ে এখন চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে দলীয় ফোরামে। এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলায় জেল খাটা খালেদা জিয়া আদৌ নির্বাচনে আসতে পারবেন কিনা তা নিয়েও রয়েছে দলের মধ্যে সংশয়।

এবার নির্বাচনে না আসলে অস্তিত্ব সংকটে পড়তে হতে পারে বিএনপিকে এই কথা দলটির হাইকমান্ড ভালোমতই বুঝেছে। আর আন্দোলন করে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে কোন দাবি আদায় করা বিএনপির পক্ষে সম্ভব না এটাও তারা বুঝে গেছে।

তাই তাদের টার্গেট নির্বাচন নিয়ে তারা মুখে আগের স্ট্যান্ডে থাকলেও অন্তরালে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে থাকবে। তাদের টার্গেট আপাতত ১০০ আসন পাওয়া। যদি সেটা সম্ভব না হয় তবে ৭০টি আসন পেলেও তারা সন্তুষ্ট থাকবে এমনটাই মনোভাব কেন্দ্রীয় অনেক সিনিয়র নেতার। আর এই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে বিএনপি।

ঈদের কয়েকদিন আগে ৭৮ সাংগঠনিক জেলার নেতাদের মতামত পর্যালোচনা করতে দুইদিন বৈঠক করেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। ওই বৈঠকে সাংগঠনিক জেলার ১৬০ নেতার বক্তব্য পর্যালোচনা করা হয়। যেখানে প্রায় সব নেতার বক্তব্যেই ‘খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাব না এবং আন্দোলনের বিকল্প নেই’- এমন মত উঠে এসেছে।

এ বিষয়ে শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এখনো কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারছে না। তবে শুরু থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনে যাবে না- এধরনের কথা জোর গলায় বলে আসলেও সম্প্রতি সে জোর কিছুটা কমে এসেছে।

বিএনপির অনেক নেতা জানান, ২০১৩ সালে দাবি না মানলে ভোট বর্জন-এমন সরাসরি সিদ্ধান্ত নিয়ে আন্দোলন করলেও এবার দাবি পূরণ না হলেও ভোটে অংশ নেয়ার চিন্তা করতেই হচ্ছে। কেননা, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইন। এই আইন অনুযায়ী পরপর দুইবার ভোট বর্জনকারী দলের নিবন্ধন বাতিল হতে পারে। তাছাড়া পরপর দুইবার নির্বাচনের বাইরে থাকলে একসময় মুসলিম লীগের অবস্থা দাঁড়ায় কিনা সেটা নিয়েও আছে শঙ্কা।

মূলত আন্দোলনের প্রস্তুতির পাশাপাশি দলের সাবেক ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা এবং নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও কাজ করছে দলটি। এ ক্ষেত্রে তথ্য-উপাত্ত ও নেতাকর্মীদের মতামত এবং স্থানীয় জনগুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর ভিত্তিতে একটি সারসংক্ষেপও তৈরি করা হবে।

ইদানিং বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা গুলশানে চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যায় মিলিত হচ্ছেন। বৈঠক করছেন, আলোাচনা করছেন। তবে এতে আগের মতো সংবাদকর্মীদের আমন্ত্রণ নেই। বৈঠকগুলো হচ্ছে খুবই গোপনে। অংশগ্রহণকারীদেরও সতর্ক করে দেয়া হচ্ছে যাতে ওইসব বৈঠকের খবর মিডিয়াতে চলে না যায় ।

comments

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here