দেশে কামাল-বি চৌধুরী, বিদেশে লবিংয়ে ইউনুস নেপথ্যে আইএসআই ও জামাতী ফান্ড

0
52

দেশে হঠাৎ করেই রাজনীতিতে নতুন নতুন মেরুকরণের দৃশ্যপট হাজির হয়েছে। বিপরীত মেরুর সব রাজনীতিবিদেরাও এখন সব এক টেবিলে বসে নিয়মিত চা-চক্রে মিলিত হচ্ছেন। যারা রাজনৈতিকভাবেই একে অন্যের বিপরীত মেরুতে এতদিন অবস্থান করেছেন এখন হঠাৎ এমন কি ঘটনা ঘটলো যে তারা সব এক টেবিলে বসে গেলেন? এমন প্রশ্নই এখন রাজনৈতিক সচেতন সবার মাঝে।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ও সাবেক রাষ্ট্রপতি বর্তমানে বিকল্প ধারার সভাপতি ডা. এ কি এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তার রাজনীতি মূলত শুরু হয়েছিল সেনাশাসক জেনারেল জিয়াউর রহমানের হাত ধরে। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তির মিলনমেলায় পরিণত হওয়া জিয়ার দল বিএনপির তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাও বি চৌধুরী। স্বাধীনতা বিরোধী শাহ আজিজ প্রধানমন্ত্রী হোন জিয়ার আমলে। সেই সময়েই উপ-প্রধানমন্ত্রী হোন ডা. বি চৌধুরী। চরম সাম্প্রদায়িক মানসিকতার মানুষ এই বি চৌধুরীকে ২০০১ সালের নির্বাচনের পর যে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে তার মাস্টার মাইন্ড ধরা হয়।

অন্যদিকে ড. কামাল হোসেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আর্শিবাদপুষ্ট একজন রাজনীতিবিদ। যদিও রাজনীতিতে তার সফলতার থেকে ব্যর্থতাই বেশি। তার পরেও স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু তাকে আইনমন্ত্রী করেন এবং পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বাংলাদেশের সংবিধান রচনার মত গুরু দায়িত্বও বঙ্গবন্ধু ড.কামাল হোসেনের উপর দিয়েছিলেন। ড. কামাল হোসেন সব সময় বলে এসেছেন তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক এবং অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তবে গত শতাব্দীর ৯০এর দশকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে আওয়ামী লীগ ছেড়ে গণফোরাম নামে একটি রাজনৈতিক দল খুলেছেন।

ড. কামাল হোসেন এবং ডা. বি চৌধুরী বাংলাদেশের রাজনীতিতে সম্পূর্ণ ভিন্ন মেরুর দুইজন। কিন্তু হঠাৎ করেই তারা একই সুরে কথা বলছেন কেন? এই বিষয়ে সবার মাঝেই কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে। তাহলে কি কামাল-বি চৌধুরীর মিলনে ভূমিকার রেখেছে তৃতীয় কোন পক্ষ? এমন প্রশ্নের জবাব উঠে এসেছে সাম্প্রতিক কিছু গোয়েন্দা তথ্যে।

ড. কামাল হোসেন অধিকাংশ সময়ই দেশের বাইরে থাকেন। চলতি বছরের শুরু থেকে মাঝামাঝি তিনি বেশ কয়েকবার যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে অবস্থান করেছেন। ড. কামালের মেয়ে জামাতা ইহুদী ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান। তিনি আবার বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধী মীর কাশেম আলীর টাকায় ‍যুদ্ধাপরাধীর বিচার বাঞ্চাল করতে করতে আন্তর্জাতিক লবিস্টের ভূমিকা পালন করেছেন। বার্গম্যানের সাথে তারকে রহমানেরও ভালো সম্পর্ক রয়েছে। ড.কামাল হোনে লন্ডনে অবস্থানকালীন সময়ে বার্গম্যানের মধ্যস্থতায় একটি বৈঠক হয় তারেক রহমানের সাথে ড. কামালের। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তান দূতাবাসের সিনিয়র দুই কর্মকর্তা এবং মীর কাশেম আলীর ভাই। তারেক রহমান অতীত কর্মকান্ডকে মাথায় না রেখে সামনে কিছু করার জন্য ড.কামালকে অনুরোধ করেন। বেশ কিছু শর্তের বিনিময়ে জামাই ডেভিড বার্গম্যানের মধ্যস্থতায় ড. কামাল তারেক রহমানের কথায় রাজি হোন। তবে শর্ত দেন তিনি প্রকাশ্যে তাকে সমর্থন দিবেন না এবং মাঝে মাঝে বিএনপির সমালোচনাও করবেন। উভয়পক্ষ রাজি হলে তারেক রহমান ড.কামালকে বলেন, আমরা যতই আন্দোলন করি না কেন হাসিনা সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে পারবো না। তাই আমাদের এমন কিছু করতে হবে যাতে করে আন্তর্জাতিক মিডিয়া হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সব সময় সরব থাকে। এই কাজে আমাদের সহযোগিতা করার একাধিত গ্রুপ এরই মধ্যে তৈরী হয়ে আছে। শুধু আপনি রাজি হয়ে দেশের মাটিতে কিছু একটা করেন। বাকি কাজগুলো আমরা করবো। তারেক রহামানের সাথে বৈঠক শেষে দেশে এসেই তীব্র সরকার বিরোধী কথাবার্তা বলতে শুরু করেন ড. কামাল হোসেন। তারেক রহমান ডা. বি চৌধুরীকে রাজি করিয়েছেন তার পুত্র মাহী বি চৌধুরীকে দিয়ে। তারেক মাহী বি চৌধুরীকে অতীত ভুলে সামনের দিনের জন্য প্রস্তুত হতে বলেন।

তারেক রহমানের ওই বৈঠকে উপস্থিত মীর কাশেম আলীর ভাই ছাড়াও লন্ডন দূতাবাসে নিযুক্ত দুই আইএসআই কর্মর্তা উপস্থিত ছিলেন। তারাই মূলত ওই বৈঠকটির আলোচ্যসূচি নিয়ন্ত্রণ করেন। সিদ্ধান্ত হয় দেশে কামাল-বি চৌধুরী ঐক্য করে রাজনীতির মাঠ গরম রাখবে এবং জাতীয় ঐক্যের কথা বার বার বলবে। দেশের ক্রান্তিকাল, সংকটকাল এমন কথা বার বার বলে জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানো হবে। আর বাইরের মিডিয়াতে এই সব প্রচারের দায়িত্ব থাকবে বিশেষ একটি লবিস্ট গ্রুপের হাতে।

এরই মধ্যে দীর্ঘদিন সরকার বিরোধী কাজ করে আসা ফটোগ্রাফার শহিদুল আলম গ্রেফতার হলে লবিস্ট গ্রুপের জন্য হাসিনা সরকার বিরোধী প্রচারণার জন্য টেস্ট কেস হিসেবে নেয়া হয়। তাতে তারা যথেষ্ট সফলও হয়েছে। এই লবিস্ট গ্রুপের মাথা হিসেবে কাজ করছে বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী ড.ইউনুস। কারণ প্রতিটি নোবেল বিজয়ীরই ভালো অ্যালামনাই থাকে। এই কাজে ইউনুস তার সর্বোচ্চটাই দিয়েছেন। তিনি বিদেশে প্রায় সকল প্রভাবশালী মিডিয়াতে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে নিউজ করাতে সক্ষম হয়েছেন। আর তার দূতিয়ালির কারণেই বিশ্বের ১২জন নোবেল জয়ী শহিদুল আলমের মুক্তি চেয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। যদিও শহিদুল আলম এমন কোন বড় চরিত্র না যে তার জন্য নোবেল বিজয়ীরা বিবৃতি দিবেন। কিন্তু এটা সম্ভব হয়েছে ড. ইউনুসের কারণে। আর এই লবিং করতে যা খরচ হয়েছে তার সবটাই বহন করছে জামাত ইসলাম। এই কাজের দেখভাল করছেন তারেক রহমানের সাথে বৈঠকে উপস্থিত থাকা পাকিস্তানী ওই দুই আইএসআই কর্মকর্তা।

comments

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here