ড. কামাল হোসেন বিশ্বমানের একজন আইনজ্ঞ, বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা এবং একজন রাজনীতিবিদ। যদিও রাজনীতিবিদ হিসেবে ড. কামাল হোসেনের জনপ্রিয়তা প্রায় শূণ্যের কোটায়। তিনি সম্ভবত বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হয়েও একেবারেই জ্বলে না উঠতে পারাদের মধ্যে একজন। রাজনীতি করতে গেলে মূলত নিজের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে অপরের সুখ-দু:খে এগিয়ে যেতে হয় সবার আগে। কিন্তু ড. কামাল হোসেন অন্যসব রাজনীতিবিদদের থেকে একটু আলাদা। তিনি নিজের স্বার্থের বাইরে একচুলও নড়েন না।
আরও পড়ুন : বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সঙ্গে ড. কামালের রহস্যময় সম্পর্ক: ফ্যাক্টস এবং তথ্য-প্রমাণ
নিন্দুকেরা ড. কামাল হোসেন সম্পর্কে বলে, যেখানে টাকা নেই সেখানে কামাল হোসেন নেই। যেখানে টাকা সেখানেই ড.কামাল হোসেন। এর প্রমাণও ভুরি ভুরি। তার মত একজন বিজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আইনজীবীকে দেশের কোন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোর্টের বারান্দায় কেউ কখনো দেখেনি। কিন্তু বাংলাদেশের স্বার্থ বিরোধী যত বহুজাতিক কোম্পানী রয়েছে প্রায় প্রতিটিরই আইনি পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন ড. কামাল হোসেন। কারণ সেখানে লাখ লাখ ডলার রয়েছে।
আরও পড়ুন : ডঃ কামালের কর ফাঁকিঃ এ যেন কেঁচো খুঁড়তে অজগর সাপ!
এবার আসি মূল প্রসঙ্গে। ২৬ আগস্ট, ২০০৬ সাল। দিনাজপুরের ফুলবাড়িতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লাখনি না করার দাবিতে ২০০৬ সালের এইদিনে বহুজাতিক কোম্পানি এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ি অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে স্থানীয় জনতা। সাধারণ জনতার আন্দোলন দমাতে না পেরে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের নির্দেশে তত্কালীন বিডিআরের গুলিতে কলেজ ছাত্র তরিকুল, আমিন ও সালেকিন নামে তিন যুবক নিহত ও দুই শতাধিক নারী-পুরুষ আহত হন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ সুজাপুরের বাবলু রায়ের মতো অনেকেই এখনো পঙ্গুত্বের অসহনীয় যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন। সাহাবাজপুরের গুলিবিদ্ধ প্রদীপ সরকার বছর দেড়েক আগে মারা গেছেন।
২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত জনতার আন্দোলন-সংগ্রামে উত্তাল ছিল ফুলবাড়ি খনি এলাকা। ২৮ আগস্ট এশিয়া এনার্জির সুবিধাভোগী (দালাল) হিসেবে চিহ্নিত কয়েক ব্যক্তির বাড়িঘর ভাঙচুর চালিয়ে পুড়িয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। গণআন্দোলনের মুখে তত্কালীন বিএনপি-জামায়াত ৪ দলীয় জোট সরকার ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় পার্বতীপুর উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে সমঝোতায় বসতে বাধ্য হয়।
অনেকেই জানেন না যে, এশিয়া এনার্জির হয়ে আইনী পরামর্শ দেয়া ব্যক্তিটি কামাল হোসেন। ওই আন্দোলন পরবর্তী সময়েও ড.কামাল হোসেন সাধারণ মানুষের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে এশিয়া এনার্জির পক্ষেই ওকালতি করেছেন। অনেকেই ড.কামাল হোসেনকে সৎ রাজনীতিবিদ হিসেবে বর্ণনা দেন। কিন্তু এই কথা কেউই বলে না যে, টাকা দিয়ে ড.কামাল হোসেনকে কেনা যায়।
[ফুলবাড়ি ট্র্যাজেডি ও একজন দালাল ড. কামাল হোসেন]
এশিয়া এনার্জির আইন বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে ড. কামাল হোসেন যোগ দেন ২০০৬ সালে। এ সময় সাপ্তাহিক ২০০০ তার একটী সাক্ষাৎকার ছাপে। যদিও পত্রিকাটি এখন বন্ধ। কিন্তু পত্রিকাটির তৎকালীন সম্পাদক পরবর্তীতে একটি নিবন্ধে এ বিষয়ে স্মৃতিচারণ করে লেখেন, “এক সময় এশিয়া এনার্জির আইনগত দিক দেখার দায়িত্ব নিয়েছিলেন ড. কামাল হোসেন। কেন এশিয়া এনার্জির পক্ষে কাজ করছেন? উত্তরে বলেছিলেন, ‘পেট চালাতে হবে তো’।” কামাল হোসেন পেট চালানোর কষ্টে পড়েছেন বলে বিবৃতি দিলে জাতি নিশ্চয়ই তাকে সহযোগীতা করতো। কিন্তু তিনি তা না করে যোগ দিলেন এশিয়া এনার্জির সঙ্গে। দেশবিরোধি তৎপরতায় যোগ দিতে তার বাধেনি।’
আরও পড়ুন :
- গনফোরামের কামাল হতে যাচ্ছেন বিএনপির চেয়ারপারসন
- রহস্যময় বৈপরীত্য : উগ্রবাদীদের সঙ্গে ড. কামাল, সমকামীদের সঙ্গে তার মেয়ে
- দেশে কামাল-বি চৌধুরী, বিদেশে লবিংয়ে ইউনুস নেপথ্যে আইএসআই ও জামাতী ফান্ড