দেশব্যাপী চলছে মাদকের বিরুদ্ধে সাড়াশী অভিযান। মাদক নির্মূল করতে বর্তমান সরকার প্রধান শেখ হাসিনা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তরুণ সমাজকে মাদকের ভয়াবহতা থেকে বাঁচাতে তিনি মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছেন।
মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানের সুফল পেতে শুরু করেছে দেশের মানুষ। মাত্র কয়েকদিনেই অধিকাংশ মাদক ব্যবসায়ীরা গা ঢাকা দিয়েছে। অনেকে মাদকের কারবার ছেড়ে দিয়েছে। যারা টাকা বা ক্ষমতার জোড়ে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে এবং প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে এইসব করছে তাদের ধরতে গেলে তারা আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর উপর সশস্ত্র হামলা চালাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তারাও ব্যবস্থা নিতে গেলে বেশ কয়েকজন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে।
চলমান মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানকে দেশের সব মহল সাধুবাদ জানালেও একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল তা কিছুতেই মানতে পারছে না। তারা এই অভিযান নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলে মূলত মাদক বিরোধী অভিযানেরই বিরোধীতা শুরু করেছে। এখন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সর্ব মহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তাহলে এই অভিযানের বিরোধীতাকারী দল বিএনপি কি চাচ্ছে না দেশ থেকে মাদক উঠে যাক!
বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ মাদক নির্মূলের নামে বিরোধী রাজনৈতিক মতের মানুষকে নির্যাতন করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে এই অভিযোগের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি সরেজমিনে ঘুরে দেখে। দেশের মাদক বিরোধী অভিযানে আসলে মাদক কারবারীদের কোন রাজনৈতিক মতাদর্শ দেখা হচ্ছে না। একজন মাদক ব্যবসায়ীর পরিচয় সে মাদকের কারবারী। তাই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এমনটাই জানিয়েছেন আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
অভিযানের শুরু থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মাদক কারবারীরা ধরা পড়ছে তা পুলিশ বা র্যাবের সাথে বন্দুক যুদ্ধে মারাও পড়ছে কিন্তু মাদকের সাথে কোন আপস নয় এই মূলমন্ত্রে চলছে অভিযান। এখন পর্যন্ত নেত্রকোনা, বগুড়া, গাইবান্ধা, ময়মনসিংয়ে নিহত বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী বিএনপি বা তার সহযোগী সংগঠনের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় একযুগ ক্ষমতার বাইরে থাকা তৃণমূল বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মী সমাজে বিভিন্ন অবৈধ কাজে জড়িয়ে পড়েছে। তাদের অধিকাংশই মাদক কারবারীর খাতায় নাম লিখিয়েছে। কারণ ক্ষমতার বাইরে থাকার কারণে অন্যকোন উপায়ে তাদের সহজে অল্প বিনিয়োগে বেশি আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
তৃণমূলে বিএনপির বিভিন্ন খরচ চালাতে গিয়ে যে মোটা অংকের টাকা খরচ করতে হয় তার বড় একটা জোগান আসে এই মাদকের কারবারীদের কাছ থেকে। শুধু তৃণমূলের কারবারীরাই না। বিএনপির বেশ কিছু প্রভাবশালী মধ্যম সারির নেতা রয়েছে যারা ক্ষমতায় না থেকেও এখনো দেশের মাদক ব্যবসার সিংহভাগ নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা তাদের নিজস্ব চেইনের মাধ্যমে সারা দেশে এই মাদকের সরবরাহ দিয়ে থাকে। আর এই মাদকের ব্যবসার বড় একটা চলে যায় বিএনপির কেন্দ্রীয় তহবিলে।
সারাদেশে মাদক বিরোধী অভিযানের জন্য সাড়ে ১৬ হাজার তালিকা তৈরী করেছে আইন-শৃংঙখলা বাহিনী। এই তালিকার বিষয়ে মাঠে নামে একটি গোয়েন্দা সংস্থা যাচাই-বাচাই করতে। তাদের তথ্যে উঠে এসেছে চমকপ্রদ সব তথ্য। তালিকা ঘেটে দেখা গেছে বর্তমানে দেশের মাদক কারবারীদের প্রায় ৭০ শতাংশ বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত।
তাই এই মুহূর্তে মাদকের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান যদি সামনের দিনে আরো অব্যাহত থাকে তবে বিএনপির তৃণমূল থেকে আসা অর্থ প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার শংকা রয়েছে। দলের বর্তমান ভঙ্গুর অবস্থায় যা বিএনপির জন্য একেবারেই সুখবর না। তাই বিএনপি দলগতভাবেই মাদকের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানের বিরুদ্ধতায় নেমেছে।
মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান বন্ধ করতে বিএনপি মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে মাঠে নামাতে দেশে-বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। যেভাবেই হোক এই যাত্রায় মাদক বিরোধী অভিযানকে বির্তকিত করা এবং এই অভিযানকে বন্ধ করতে তারা জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।